কেউ ঢিল ছুড়ছে নাকি! চেয়ে দেখি ভাঙছে ঘর

হঠাৎই উপর থেকে মাথায় ছোট-ছোট ইটের টুকরো পড়ায় গৃহকর্ত্রী প্রথমে ভেবেছিলেন, কেউ হয়তো ঢিল ছুড়ছে। মাত্র কয়েক সেকেন্ড।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

রক্ষা: অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন ঘোষাল দম্পতি। নিজস্ব চিত্র

দুপুরে টিভিতে ধারাবাহিক দেখে পাশের ঘরে গিয়ে শুয়েছিলেন বছর সত্তরের গৃহকর্তা। খাটের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বছর ৬০-র গৃহকর্ত্রী। হঠাৎই উপর থেকে মাথায় ছোট-ছোট ইটের টুকরো পড়ায় গৃহকর্ত্রী প্রথমে ভেবেছিলেন, কেউ হয়তো ঢিল ছুড়ছে। মাত্র কয়েক সেকেন্ড। তার পরেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল মাঝখানের অংশ। একচুলের জন্য বেঁচে গিয়েছেন গৃহকর্তা সনৎকুমার ঘোষাল ও তাঁর স্ত্রী মিতাদেবী। পরে তাঁদের মেয়ে রূপা ও পড়শিরা এসে দু’জনকে উদ্ধার করেন।

Advertisement

শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা থানার রাজেন্দ্রলাল স্ট্রিটে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন বরো ইঞ্জিনিয়ারেরা। পৌঁছন স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইকবাল আহমেদও। তিনি বাড়িটিকে বিপজ্জনক বললেও বাসিন্দাদের দাবি, বাড়িটি পুরনো ঠিকই। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সারানো হয়েছে। আর প্রতি বছরই সম্পত্তিকর দেওয়া হয়। কিন্তু পুরসভা বা বরোর খাতায় বাড়িটি কোনওদিনই ‘বিপজ্জনক’ বলে নথিভুক্ত হয়নি।

এ দিন উদ্ধার করার কয়েক ঘণ্টা পরেও আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছিল ঘোষাল দম্পতিকে। সনৎবাবু জানান, এটি তাঁর পৈতৃক বাড়ি। কড়ি-বরগার ছাদ আর চুন-সুরকির গাঁথনি দিয়ে তৈরি বাড়িটির বয়স দেড়শোরও বেশি। কিন্তু কখনও বিপজ্জনক বলে কাউন্সিলর বা পুরসভার তরফ থেকে জানানো হয়নি। যদিও বাড়িটিতে গিয়ে দেখা গেল, একতলার ঘরগুলিতে আলো পৌঁছয় না। স্যাঁতসেঁতে। সেখানে রান্নাঘর আর বাথরুম ছাড়া আর কোনও ঘর ব্যবহার করা হয় না। সকলেই থাকেন দোতলায়। তবে বাসিন্দারাই জানিয়েছেন, অন্য ঘরগুলি আগে সারানো হলেও ভেঙে পড়া ঘরটি বছর আটেক আগে সারানো এবং রং করা হয়েছিল।

Advertisement

মিতাদেবী বলেন, ‘‘আমার স্বামী সবে এসে তখন শুয়েছেন। আমি খাটের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ বাজ পড়ার মতো আওয়াজ। মনে হল, বাড়িটা কেঁপে উঠল। তার পরেই চোখের সামনে হুড়মুড় করে সব ভেঙে পড়ল।’’ এ দিনের ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন সনৎবাবুদের মেয়ে রূপা। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরে কর্মরত রূপা তখন বাড়ি ফিরে সবে দোতলায় উঠেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আর একটু দেরি হলে আমি চাপা পড়তাম। ভাগ্য ভাল আমি বা বাবা-মা, কেউই চাপা পড়িনি।’’

অন্য দিকে, এ দিনই ওয়াটগঞ্জ থানার ডায়মন্ড হারবার রোডে একটি দোতলা বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চাল-সহ দেওয়াল ভেঙে পড়ে। বাড়ির দুই বাসিন্দা বুদ্ধদেব প্রামাণিক এবং বাসুদেব শাসমলের চোট লাগে। এসএসকেএম হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement