বাড়ির দেওয়ালে এ ভাবেই মায়ের সার্টিফিকেট আটকে রেখেছেন মৈত্র ভট্টাচার্য।—নিজস্ব চিত্র।
মৃতকে মাকে বাড়ির মধ্যেই সমাধিস্থ করতে বাবার এক পরিচিতের কাছে রবিবার দুপুরে গিয়েছিল মৈত্র ভট্টাচার্য। তরুণ কুমার পোড়েল নামে বিডন স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে গিয়ে মৈত্র বলে মা পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন। মা মারা যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলেন ওই বাড়িতেই তাঁকে সমাধিস্থ করতে।
মৈত্রকে চিনতেন তরুণ। জানতেন তাঁর মানসিক বিকারের কথা। তাই মৈত্রর কথায় সন্দেহ হয়। মৈত্র চলে যাওয়ার পরই তিনি বিধাননগর থানায় ফোন করেন। জানান ঘরে কৃষ্ণার দেহ রয়েছে।
সল্টলেকে মায়ের পচা গলা দেহ আগলে প্রায় দু’সপ্তাহ কাটানো ছেলে মৈত্রকে এ দিন বিকেলে ফের বিই ২২০-র বাড়িতে নিয়ে যান তদন্তকারীরা। সেখানেই পুলিশকে মৈত্র বলেন,“মা বার বার বলেছিলেন বাড়ির মধ্যেই সমাধিস্থ করতে।” তদন্তকারীদের মৈত্র জানিয়েছেন, তিনি নাকি মা মারা যাওয়ার পর দেওয়াল ভেঙে সমাধির ব্যবস্থাও করছিলেন। কিন্তু একা তিনি ব্যবস্থা করতে পারছিলেন না। তাই বাবার পরিচিত তরুণবাবুর সাহায্য চান।
আরও পড়ুন: রবিনসন কাণ্ডের ছায়া? সল্টলেকের বাড়িতে ১৪ দিন মায়ের মৃতদেহ আগলে ছেলে
তবে মৈত্রর বক্তব্য পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেন না তদন্তকারীরা। কারণ এখনও পর্যন্ত মৈত্র স্পষ্ট ভাবে বলেননি ঠিক কী ভাবে কৃষ্ণার মৃত্যু হয়েছে। তদন্তকারীদের ধারণা, মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি লুকোতে চাইছিলেন মৈত্র। সেই কারণেই কাউকে কিছু বলেননি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেহে পচন শুরু হলে বাধ্য হয়ে সাহায্য চান পারিবারিক সূত্রে পরিচিত তরুণের কাছে।
আর সেখান থেকেই বেহালার শুভব্রত মজুমদারের ঘটনার সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সেখানে মায়ের দেহ ফ্রিজারে তিন বছর ধরে রেখে দিয়েছিল শুভব্রত।
আরও পড়ুন: জিএসটি শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব! দাবি জেটলির, শীতঘুম ভাঙল মোদীর, খোঁচা কংগ্রেসের
অন্য দিকে তদন্তকারীদের মৈত্র জানিয়েছেন, তিনি সিটি কলেজ থেকে বায়ো সায়েন্স নিয়ে বি এসসি পাশ করেন। তবে সেটা কতটা সত্যি, তা-ও দেখছেন তদন্তকারীরা। মৈত্রর বাড়ির দেওয়ালে আটকানো রয়েছে বিভিন্ন পরিচয়পত্র। ভোটার কার্ড থেকে শুরু করে আধার কার্ড সমস্ত দেওয়ালে আঠা দিয়ে আটকে রাখা। তদন্তকারীদের নজর কেড়েছে এই বিষয়টিও। কেন এরকম করেছেন সে নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি মৈত্র। ডিসি সদর বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট, অমিত পি জাভালগি জানিয়েছেন,“কৃষ্ণার দেহের ময়না তদন্ত হয়েছে।আমরা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। ময়না তদন্তের রিপোর্টেই বোঝা যাবে কী ভাবে মৃত্যু এবং কত দিন আগে।”