তিলজলায় শিশুকে যৌন নির্যাতনের পর খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত এলাকা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
সাত বছরের শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত তিলজলা। অভিযুক্ত অলোক কুমারকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেয়েকে হারিয়ে হাহুতাশ করছেন তাঁর মা।
মৃত শিশুর মা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, রবিবার সকালে মেয়েকে ফ্ল্যাটের নীচে আবর্জনা ফেলার জন্য পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নীচ থেকে আর ঘরে আসেনি শিশু। তাকে নির্যাতন করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। শিশুটির মা বলেন, ‘‘আমার মেয়ের শরীরের কোনও অংশ ও বাদ দেয়নি। মুখ বেঁধে রেখেছিল। মেয়ের জিভও বেরিয়ে পড়েছিল। এত মেরেছে যে মেয়েটা মরেই গেল।’’
মৃতের মা আরও জানান, সকালে আবর্জনা ফেলতে ফ্ল্যাটের নীচে গিয়েছিল তাঁর কন্যা। কিন্তু কুকুর দেখে ভয় পেয়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ে। আবর্জনা ফেলতেও পারেনি। সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার সময় দোতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শিশুটিকে টেনে নেন অভিযুক্ত। তার পর ঘরের ভিতর তাঁর উপর নির্যাতন চালানো হয়।
ধৃত অলোক বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অপহরণ করে খুন এবং যৌন নির্যাতনের মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন অভিযুক্ত।
এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তিলজলা থানায় বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, রবিবার সকাল থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ পাত্তা দেয়নি। তারা আরও আগে পদক্ষেপ করলে হয়তো শিশুটিকে বাঁচানো যেত, দাবি প্রতিবেশীদের। রবিবার রাতে তিলজলা থানায় ঢিল ছোড়ে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ এলাকা খালি করার জন্য লাঠি নিয়ে বেরোলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
শিশুটির মাথায় স্ক্রু ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে ফুটো করার চিহ্ন মিলেছে। আঘাত রয়েছে কানেও। স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে আঘাত করেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দোতলার ওই ফ্ল্যাটে গ্যাস সিলিন্ডারের পাশে একটি বস্তার মধ্যে তার দেহ লুকিয়ে রাখা ছিল। অভিযোগ, ধৃত অলোকের বাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে রাখা ছিল। তাই সকাল থেকে পাড়ায় খোঁজ করলেও ওই ফ্ল্যাটে মেয়েকে খুঁজতে ঢোকেননি শিশুর বাবা। পরে পুলিশ এলে ফ্ল্যাটে ঢুকে তল্লাশি চালানো হয়। সিলিন্ডারের পাশ থেকে উদ্ধার হয় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীটির দেহ।
দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন তিলজলাবাসী।