অভিযান: বাগুইআটিতে জমা জলে মশার লার্ভা। শনিবার সেখানে হানা দেয় পুরসভার দল। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
পুজোর পর থেকে আচমকা বাগুইআটির বিভিন্ন এলাকায় মশা এবং মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছিল। সম্প্রতি এর জেরে ওই এলাকার অশ্বিনীনগরে এক মহিলা পুলিশকর্মীর মৃত্যুও হয়েছে। এর পরেই বাগুইআটির বিভিন্ন এলাকার বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে জমানো জলে মশার লার্ভার হদিস মিলেছিল বলে জানাচ্ছে বিধাননগর পুরসভা। তাদের দাবি, সরানো হয়েছে সেই জমা জল। কিন্তু তার পরেও এলাকা থেকে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছিল।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে পুরসভার একটি দল শনিবার সকালে বাগুইআটির পূর্ত দফতরের আবাসন, তাদের অফিস এলাকা ও গুদামে হানা দেয়। দু’টি ওয়ার্ড জুড়ে পূর্ত দফতরের ওই এলাকা। বিধাননগর পুরসভার অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে বারবার বলা সত্ত্বেও ওই সব জায়গায় সাফাই করেনি সংশ্লিষ্ট দফতর। সেখান থেকে শনিবার বিপুল পরিমাণে লার্ভা মিলেছে বলে পুরসভার দাবি। অবিলম্বে ওই এলাকা পরিষ্কার না করলে পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, তা মানছে বিধাননগর পুরসভা। ইতিমধ্যেই তারা পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ বার দফতরের কর্তাদের চিঠি পাঠাচ্ছে পুরসভা।
এক পুরকর্তা জানান, ১৮ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু অংশ জুড়ে পূর্ত দফতরের কর্মচারীদের আবাসন ও গুদাম রয়েছে। সেখানে অন্য সরকারি দফতরের অফিসও রয়েছে। ওই এলাকা থেকেই ছ’জন কর্মচারীর জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর পায় পুরসভা। তার পরেই এ দিনের অভিযান চলে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ঝোপঝাড়ে ভরেছে জায়গাটি। প্লাস্টিকের জিনিস, মাটির হাঁড়ি থেকে টিনের ড্রাম-সহ বিভিন্ন জিনিস স্তূপ হয়ে পড়ে সেখানে। পড়ে রয়েছে গুদামের বাতিল জিনিসও। সে সবের মধ্যে জমা জলে প্রচুর লার্ভা মিলেছে বলে অভিযোগ পুরসভার। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, আবাসন চত্বরে মশা নিয়ন্ত্রণে ধোঁয়া দেওয়া হয়।
বিধাননগরের মেয়র পারিষদ প্রণয় রায় জানান, ওই এলাকা নিয়ে বারবার অভিযোগ আসছিল। ইতিমধ্যেই ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক মহিলা পুলিশকর্মীর মৃত্যুও হয়েছে। পূর্ত দফতরকে জানিয়েও কাজ হয়নি। পুরসভা সেখানে লার্ভা মারতে তেল ছড়াচ্ছে এবং মশা নিয়ন্ত্রণে ধোঁয়া দিচ্ছে। অথচ ওই জায়গা পরিচ্ছন্ন করার কথা পূর্ত দফতরেরই বলে জানাচ্ছেন তিনি। দ্রুত সাফাই না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে জানান মেয়র পারিষদ। তিনি বলেন, ‘‘কাজ না হওয়ায় পুরসভা এবং সরকারের বদনাম হচ্ছে। আমরা চিঠি পাঠাব। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার করার কথা জানানো হয়েছে।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে এক পূর্ত আধিকারিকের দাবি, ‘‘ওই গুদামে সরকারি কাজের জিনিস থাকে। কাজ চলাকালীন তা বার করা হয়। এমন নয় যে, দীর্ঘ দিন ধরে মালপত্র পড়ে রয়েছে বা সে সবের দেখভাল হয় না।’’ সেখানেও জল জমে থাকলে পরিষ্কার করা হয় বলে দাবি তাঁর।