জঞ্জাল সাফাই, লার্ভিসাইড তেল স্প্রে করতে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত সংস্থাগুলির ৯০০ জন কর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
সংস্থা নিয়োগ করে এ বারও ডেঙ্গি মোকাবিলায় ‘পালস মোড ক্লিনিং’ পদ্ধতিকে হাতিয়ার করছে হাওড়া পুরসভা। গত বছর হাওড়া শহরে ডেঙ্গি সংক্রমণ বৃদ্ধির পরে এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে সাফল্য এসেছিল বলে পুরসভার দাবি। এ বছর গ্রীষ্মের শুরুতেই ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দেওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন পুর আধিকারিকেরা। পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন মাসে ৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই এই পদ্ধতিতে জঞ্জাল সাফাই, লার্ভিসাইড তেল স্প্রে করতে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত সংস্থাগুলির ৯০০ জন কর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় কী করণীয়, তা নিয়ে সম্প্রতি হাওড়ার শরৎ সদনে পুর স্বাস্থ্য দফতরের বৈঠক হয়। ঠিক হয়েছে, এ বার এলাকাকে জঞ্জালমুক্ত করার পাশাপাশি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের খোঁজ নেবেন পুর স্বাস্থ্যকর্মীরা। হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, একটি সংস্থাকে দিয়ে ইতিপূর্বেই পালস মোড ক্লিনিং-এর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ওই সংস্থার সাফাইকর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে প্রতিদিন সাফাই করছেন। কোনও একটি ওয়ার্ডে প্রথমে ৮-১০ জনের দল গিয়ে টানা সাত দিন সাফাই অভিযান চালাচ্ছে। এর পরে মাসখানেক বাদে ওই ওয়ার্ডে ফিরে গিয়ে সাত দিন সাফাইকাজ করা হচ্ছে। এ ভাবেই ওয়ার্ডগুলিকে পরিষ্কার রাখা হচ্ছে, যাতে ডেঙ্গি মশার লার্ভা জন্মাতে না পারে। একেই বলে ‘পালস মোড ক্লিনিং’। পুর চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘গত বছরের শেষে হাওড়ায় প্রথম এই পদ্ধতিতে সাফাই অভিযান শুরু হয়। এ বছরেও ইতিমধ্যেই ৪০০ জন এলাকায় গিয়ে তেল ছড়ানোর কাজ শুরু করেছেন। পুরসভার সাফাইকর্মী ছাড়া আরও ৫০০ জন সাফাইকর্মীকে নিয়োগ করেছে সংস্থাগুলি। ডেঙ্গি মোকাবিলায় সাফাই অভিযান ও তেল ছড়ানোর খরচ দিচ্ছে স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি বা সুডা।’’ এই বিশেষ পদ্ধতির জন্য বছরে খরচের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা।
পুরসভা সূত্রের খবর, ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুর স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। ১৫ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মতো ডেঙ্গিপ্রবণ ওয়ার্ডে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। গত বছর পুর এলাকায় দু’হাজারেরও বেশি বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই এ বার আগে থেকেই ডেঙ্গি রুখতে পুরসভা মাঠে নামছে বলে দাবি পুরকর্তাদের।