অটোয় শ্লীলতাহানি, যুবককে ধরে পুলিশে দিলেন তরুণী

বছর বাইশের এক তরুণী ক্রমাগত চড় মেরে যাচ্ছেন একটি ছেলেকে। শনিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টরে এমন দৃশ্য দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন টহলদার ভ্যানে থাকা পুলিশের এক আধিকারিক। কিন্তু কী করে ওই তরুণীকে থামাবেন, বুঝতে পারছিলেন না তিনি। শেষে তরুণীর সঙ্গীর সাহায্য নিয়ে তাঁকে নিরস্ত করেন ওই পুলিশ অফিসার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৯
Share:

বছর বাইশের এক তরুণী ক্রমাগত চড় মেরে যাচ্ছেন একটি ছেলেকে। শনিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টরে এমন দৃশ্য দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন টহলদার ভ্যানে থাকা পুলিশের এক আধিকারিক। কিন্তু কী করে ওই তরুণীকে থামাবেন, বুঝতে পারছিলেন না তিনি। শেষে তরুণীর সঙ্গীর সাহায্য নিয়ে তাঁকে নিরস্ত করেন ওই পুলিশ অফিসার। পরে তরুণী ও তাঁর বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারেন, ওই যুবক দীর্ঘক্ষণ ধরে ওই তরুণীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল মন্তব্য করছিল। কিন্তু ভয়ে তাঁরা কিছু বলতে পারেননি। শেষে এক সময়ে আর থাকতে না পেরে মাঝরাস্তায় অটো থেকে নেমে এ ভাবেই প্রতিবাদ করে পুলিশের হাতে অভিযুক্ত হেমন্ত দাসকে (২৯) তুলে দেন তরুণী।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ যাদবপুর থেকে রুবিগামী একটি অটোয় চড়ে এক বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন ওই তরুণী। তিনি জানান, অটোর সামনে এক যুবক বসেছিল। তিনি অসুস্থ থাকায় বন্ধুর কাঁধে মাথা রেখে বসেছিলেন। হঠাৎ খেয়াল করেন, সামনে বসে থাকা ওই যুবক তাঁকে পিছন ফিরে বারবার দেখছে এবং অটোচালককে ক্রমাগত নানা অশ্লীল কথা বলে যাচ্ছে। প্রথমে ওই যুবকের কথায় পাত্তা দেননি তিনি এবং তাঁর সঙ্গী। তরুণীর অভিযোগ, প্রতিবাদ না করায় যুবকের সাহস বেড়ে যায়। মণ্ডলপাড়া ব্রিজের কাছে অটো থেকে নেমে সরাসরি ওই তরুণীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল কথা বলে অভিযুক্ত যুবক। এমনকী নানা অঙ্গভঙ্গিও করে বলে তরুণীর দাবি।

তরুণী জানিয়েছেন, আর সহ্য করতে না পেরে তিনি অটো থেকে নেমে পড়েন এবং ওই যুবকের জামার কলার ধরে তাকে এলোপাথাড়ি চড় মারতে শুরু করেন।

Advertisement

অত রাতে এক তরুণীকে রাস্তায় নামতে দেখে টহলরত জিপে থাকা পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিন্তু কেন তরুণী এক যুবককে এমন ভাবে মারছেন, তা ঠাহর করতে পারেননি ওই অফিসার। প্রায় কয়েক মিনিট মারার পরে রীতিমতো ক্লান্ত হয়ে পড়লে ওই তরুণী অফিসারকে ঘটনাটি সবিস্তার জানান। এর পরেই ওই পুলিশ আধিকারিক অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেন।

গরফা থানার ওই অফিসারের কথায়, ওই তরুণীর সাহসের প্রশংসা না করে উপায় নেই। অত রাতে ফাঁকা রাস্তায় নেমে ‘শ্লীলতাহানি’র প্রতিবাদ করা এবং পুলিশের হাতে অভিযুক্তকে তুলে দেওয়া খুব একটা সহজ বিষয় নয়। যদিও তরুণী এ দিন জানান, পুলিশের গাড়ি দেখেই তিনি সাহস সঞ্চয় করে রাস্তায় নেমে পড়েন। তরুণীর কথায়, ‘‘আমি অসুস্থ বোধ করছিলাম বলেই সঙ্গীর কাঁধে মাথা দিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু ক্রমাগত অশ্লীল কথা শুনতে শুনতে মাথা গরম হয়ে যায় এবং ঠিক করি যা হয় হবে, আমি প্রতিবাদ করব।’’ তরুণী জানিয়েছেন, এই রাস্তা দিয়ে তিনি প্রায়ই যাতায়াত করেন। রাস্তাটা বেশির ভাগ সময়েই অন্ধকার থাকে। তাঁর কথায়, ‘‘আজ যে ভাবে ওই পুলিশ অফিসার টহলদারি গাড়ি থেকে নেমে এসে আমায় সাহায্য করেছেন তা প্রশংসনীয়। পরে থানায় গিয়ে জানতে পারি, উনি গরফা থানার অফিসার-ইন-চার্জ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement