Crime

গোয়েন্দা-কার্ড বানিয়ে অপহরণ ব্যবসায়ীকে

পাশাপাশি জেরায় ধৃতেরা দাবি করেছে, গোপাল ও আরও কয়েক জন ব্যবসায়ীর থেকে কয়েক বছর ধরে টাকা পেত তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ০২:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি

লোকজনকে বোকা বানাতে ‘সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট’ লেখা পরিচয়পত্র বানিয়েছিল তারা। নিজেদের পরিচয়ও দিয়েছিল গোয়েন্দা হিসেবে। সেই পরিচয়েই বেলুড়ের বাসিন্দা, ছাঁট লোহার ব্যবসায়ী গোপাল বুধালিয়াকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল অপহরণকারীরা। এমনকি তাঁকে জোর করে টোটোয় তোলার সময়ে আশপাশের কয়েক জন এগিয়ে এলে তাঁদের ওই কার্ড দেখিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ফলে কারও কোনও সন্দেহ হয়নি।

Advertisement

ব্যবসায়ী অপহরণের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। পাশাপাশি জেরায় ধৃতেরা দাবি করেছে, গোপাল ও আরও কয়েক জন ব্যবসায়ীর থেকে কয়েক বছর ধরে টাকা পেত তারা। সেই পাওনা টাকা আদায় করতেই গোয়েন্দা সেজে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়। ওই কাজে শামিল করা হয় দুই মহিলাকেও। তখনই তদন্তকারীদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়, দু’পক্ষ পরস্পরের পরিচিত। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অরুণ সিংহ, সনাতন মাহাতো, আরতি জৈন এবং রুকসারা তবসু।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বালির ব্যাঙ্কে বন্ধু অমিত ঝুনঝুনওয়ালার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন গোপাল। তা জানতে পেরে জি টি রোডের উপরে ব্যাঙ্কের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে অরুণেরা। অমিত ও গোপাল ব্যাঙ্ক থেকে বেরোতেই তাঁদের ঘিরে ধরে অপহরণকারীরা। কোনও মতে অমিত পালাতে পারলেও গোপালকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় হুগলিতে।

Advertisement

ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কিছু সূত্র পায় পুলিশ। বালি থানার ওসি সৈয়দ রেজাউল কবীরের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল উত্তরপাড়া ও বৈদ্যবাটীর বেশ কয়েকটি বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এর পরেই পুলিশি ঝামেলা এড়াতে ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপালকে ছেড়ে দেয় অরুণেরা।

গত সোমবার চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের এবং গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সামনে আসে আসল ঘটনা। পুলিশ জানায়, কর ফাঁকি-সহ অন্যান্য কারণে গোপাল, অমিত এবং তাঁদের আর এক বন্ধু বিভিন্ন নামে প্রায় ১০টি সংস্থা খুলেছিলেন। এ ছাড়াও ব্যবসায় মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের জন্য অরুণ, সনাতন প্রমুখের নামে কলকাতার ৭-৮টি ব্যাঙ্কে খোলা হয়েছিল কারেন্ট অ্যাকাউন্ট। এর বিনিময়ে ওই যুবকদের কমিশন পাওয়ার লোভ দেখিয়েছিলেন গোপালেরা।

অভিযোগ, গত চার বছর ধরে কমিশনের সেই টাকা দেননি গোপাল। উল্টে অরুণেরা জানতে

পারছিল, তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কোটি টাকার লেনদেন চলছে। এর পরেই কমিশনের বকেয়া টাকা আদায় করতে অপহরণের ছক কষে তারা। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘অপহরণের অভিযোগে চার জন গ্রেফতার হয়েছে। পুরো ঘটনায় আর কারা জড়িত, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement