Urbi

Kolkata Metro: মাটির নীচে চিরঘুমে ‘উর্বী’, রক্ষা করবে সুড়ঙ্গের দেওয়াল

উর্বীর পেট থেকে একে একে সব যন্ত্রাংশ আগেই বার করা হয়েছিল। মাটির নীচে পড়েছিল শুধু তার বহিরাবরণ।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৫১
Share:

উর্বী ফাইল চিত্র

উর্বী, যার অর্থ পৃথিবী। টানেল বোরিং মেশিন ‘উর্বী’র বহিরাবরণ ভূগর্ভে চিরতরে থেকে গিয়ে যেন সেই নামকেই সার্থক করতে চলেছে।

Advertisement

উর্বীর পেট থেকে একে একে সব যন্ত্রাংশ আগেই বার করা হয়েছিল। মাটির নীচে পড়েছিল শুধু তার বহিরাবরণ। মেট্রো সূত্রের খবর, উর্বীর দ্বিস্তরীয় ওই বহিরাবরণ প্রায় ৫০ মিলিমিটার পুরু। ওই রকম পুরু ইস্পাতের পাতে মোড়া আবরণ, ভূগর্ভে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের ৪০ গুণ পর্যন্ত সইতে পারে বলে জানা গিয়েছে। ফলে চিরঘুমে যাওয়া উর্বীর আয়ু ফুরোলেও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গকে সুরক্ষিত রাখার কাজ সে করে যাবে।

কী ভাবে? ভূগর্ভে জল, অম্ল এবং ক্ষারীয় চরিত্রের মাটি যাতে কোনও ভাবেই যন্ত্রের আবরণের ক্ষতি করতে না পারে, সে কথা মাথায় রেখেই অনেক বেশি পোক্ত করা হয় সেটি। ফলে কঠিন ইস্পাতের তৈরি অতিকায় পাইপের মতো দেখতে ওই বহিরাবরণ কার্যত সুড়ঙ্গের একটি অংশে দেওয়ালের কাজ করবে। উর্বী সেখানে চতুর্দিকের মাটির চাপ ধরে রাখবে। উর্বীর সামনের দিকের ৯ মিটার অংশ ওই কাজে ব্যবহার হবে। সুড়ঙ্গ করতে মাটি কাটার জন্য টিবিএমের সামনের দিকে টাংস্টেন কার্বাইডের তৈরি অতি কঠিন যে ব্লেড বা কাটার হেড থাকে, তা উর্বীর দেহ থেকে খুলে ফেলা হয়েছে। বাইরের আবরণ এখন ইস্পাতের চোঙ। সুড়ঙ্গ খননের সময়ে সামনের দিকের ওই চোঙই ভূগর্ভে মাটির বিপুল চাপ সামাল দেয়।

Advertisement

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত নিজের অংশের সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ প্রথমে শেষ করে উর্বী। গত বছর এসপ্লানেড থেকে শুরু হয়ে তার দৌড় শিয়ালদহে গিয়ে থেমেছিল অক্টোবরে। ফের চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মুখ ঘুরিয়ে বৌবাজার অভিমুখে পথচলা শুরু করেছিল উর্বী। উদ্দেশ্য, শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার পর্যন্ত অংশে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ‘চণ্ডী’র অসমাপ্ত কাজ শেষ করা। সতর্কতার সঙ্গে গত এপ্রিল মাসে সেই কাজও হয়ে যায়।

এর পরে শিয়ালদহ দিয়ে উর্বীর পেটের মধ্যে থাকা যন্ত্রাংশ এক এক করে খুলে আনা শুরু হয়। সেই কাজও প্রায় সম্পূর্ণ। এখন উর্বীর বাইরের ওই আবরণ থমকে রয়েছে বৌবাজারের দুর্ঘটনাগ্রস্ত অঞ্চলের সামান্য আগে। সেখানে মাটির চরিত্র বদলে গিয়ে তা জমে কঠিন হয়ে পড়ায় চণ্ডীকে তুলতে গিয়ে যথেষ্ট ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে। একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উর্বীর চারপাশে। এই অবস্থায় উর্বীর আবরণ কেটে টুকরো করে বার করার সুযোগ থাকলেও মেট্রো কর্তৃপক্ষ সে পথে হাঁটতে চাইছেন না।

ইস্পাতের ওই খোল সুড়ঙ্গ হিসেবে ব্যবহার হলে তাতে ক্ষতি কিছু হবে না বলেই মত মেট্রোর আধিকারিকদের। মেট্রোর এক আধিকারিকের মতে, ‘‘স্বাভাবিক টিবিএমের যে আয়ু থাকে, তার মেয়াদ উর্বীর ক্ষেত্রে ফুরিয়েছে। ফলে ওই যন্ত্র আর ব্যবহার করা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় উর্বীর বহিরাবরণ সুড়ঙ্গের দেওয়াল হিসেবে ব্যবহার করলে ক্ষতি কিছু নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement