বিপজ্জনক: এখনও ভাঙা অবস্থাতেই রয়েছে কবি নজরুল মেট্রো স্টেশনের ছাদ। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
আমপান বা আয়লার মতো বড়সড় ঝড় নয়। সামান্য কালবৈশাখীর দাপটেই উড়ে গিয়েছিল গড়িয়া সংলগ্ন কবি নজরুল মেট্রো স্টেশনের ছাউনির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেই ঘটনার পরে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, মেট্রো স্টেশনের ছাউনি এত দুর্বল হবে কেন? তার পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও মেট্রো কর্তৃপক্ষ এখনও ছাউনি মেরামত করে উঠতে পারেননি। ফলে বৃষ্টির মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে মেট্রো স্টেশনের পিছল প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থেকে নামতে হচ্ছে যাত্রীদের। সেখানে মাথার উপরে খোলা আকাশ। পরিস্থিতি এমনই যে, এক দিকের এসক্যালেটর বন্ধ রাখতে হচ্ছে বৃষ্টিতে বিকল হওয়ার আশঙ্কায়। যাত্রীদের এই ভোগান্তি চললেও কবে ছাউনির মেরামতি হবে, তা নিয়ে মেট্রো কিছুই জানাতে পারেনি।
গত সোমবার রাতের কালবৈশাখীতে কবি নজরুল স্টেশনের উত্তর প্রান্তের ছাউনির প্রায় ৪০ মিটার অংশ আচমকা উড়ে যায়। টিনের ওই চাল যে ভাবে উড়ে যায়, তাতে সেই সময়ে রাস্তায় লোকজন থাকলে বড়সড় বিপদ হতে পারত। ঘটনার পর থেকে টিনের একাধিক অংশ খোলা অবস্থায় বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে। একটু হাওয়া দিলেই সেই টিন ইস্পাতের গার্ডারে আছড়ে পড়ায় প্রবল শব্দ হচ্ছে। ঝোড়ো হাওয়ায় ওই সমস্ত টিনের টুকরো উড়ে গিয়ে আশপাশের জনবহুল এলাকায় পড়লে নতুন বিপত্তি ঘটতে পারে।
ছাউনি উড়ে যাওয়ায় কবি নজরুল স্টেশনে নামবেন, এমন যাত্রীদের বেশি অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। কারণ, মেট্রোর পিছনের দিকের দু’টি কামরা কার্যত ছাউনিবিহীন জায়গায় দাঁড়াচ্ছে। ফলে, বৃষ্টির মধ্যে যে সমস্ত যাত্রী কবি সুভাষগামী মেট্রোর পিছনের দিকের কামরা থেকে নামছেন, তাঁদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। সব চেয়ে বেশি অসুবিধা হচ্ছে প্রবীণ নাগরিক, মহিলা ও শিশুদের। ভেজা ও পিছল প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে তাঁদের আসতে হচ্ছে। ঘটনার পরে এখনও মেট্রোর কোনও শীর্ষ আধিকারিক ওই স্টেশন পরিদর্শন করেননি বলে অভিযোগ। কেন ছাউনি ভাঙল বা কবে সেটির মেরামতি হবে, তা-ও জানায়নি মেট্রো।
এ দিকে, শনিবার মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি নির্মীয়মাণ নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর বিমানবন্দর লাগোয়া জয় হিন্দ স্টেশন পরিদর্শনে যান। দিনকয়েক আগে রেল বোর্ডের সুরক্ষা সংক্রান্ত বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল দু’টি মেট্রোপথের সুরক্ষার বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। কিন্তু তার পরেও মেট্রোর তরফে এ নিয়ে উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি।
মেট্রো সূত্রের খবর, মেরামতির ক্ষেত্রে প্রধান বাধা অর্থের অভাব। ফলে, কবে তা হবে, স্পষ্ট নয়। এক আধিকারিক জানান, আগামী সপ্তাহে আবহাওয়ার উন্নতি হলে মেরামতির কাজ শুরু হতে পারে। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মন্তব্য করেননি।