ছবি পিটিআই।
এ বছর কালীপুজোয় আর দক্ষিণেশ্বরে পৌঁছনো হল না। সে আশা যে নেই, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।মেট্রোর সিগন্যাল ব্যবস্থার কিছু জরুরি সরঞ্জাম জার্মানি থেকে ঠিক সময়ে এসে পৌঁছয়নি। সেই কারণেই পিছিয়ে যাচ্ছে কাজ।
অথচ কাজের গতি দেখে মেট্রোর কর্তাদের অনেকেই ভেবেছিলেন, কবি সুভাষ থেকে উঠে এক ট্রেনে দক্ষিণেশ্বর পৌঁছনোর সুযোগ দর্শনার্থীরা চলতি বছরের কালীপুজোতেই পাবেন। তা হলে নোয়াপাড়া থেকে বরাহনগর হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত চার কিলোমিটার মেট্রোর পথ অচিরেই জুড়বে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর সঙ্গে। স্টেশন-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরি হয়েই গিয়েছিল। কিন্তু সিগন্যালের কিছু জরুরি সরঞ্জাম বিদেশ থেকে সময় মতো না আসায় যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ হতে কেটে যেতে পারে চলতি বছর। মেট্রো সূত্রের খবর, ওই পথে মেট্রো চলাচলের জন্য আগামী বছরের গোড়া পর্যন্ত প্রতীক্ষা করতে হতে পারে।
টালা সেতু ভাঙার পর থেকে উত্তর শহরতলির যাত্রীদের মেট্রো-নির্ভরতা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। বি টি রোডের যানজট এড়িয়ে নির্বিঘ্নে শ্যামবাজার বা মধ্য কলকাতা পর্যন্ত আসতে অনেকেই যাতায়াতের জন্য নোয়াপাড়া থেকে মেট্রো ব্যবহার করছেন। ডানলপ ও বরাহনগরের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের যাতায়াতের কথা ভেবেই দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো চালু করতে নির্মাণকাজের গতি অনেকটাই বাড়িয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ছ’হাজারের পরে নাম, কিডনি পেতে অপেক্ষা দু’বছর
লকডাউনের মধ্যেও সেজে উঠেছে সম্প্রসারিত মেট্রোপথের দু’টি স্টেশন, বরাহনগর ও দক্ষিণেশ্বর। মেট্রোর লাইন পাতার কাজও শেষ। থার্ড রেল বসানো ও বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শেষের মুখে। ট্র্যাকের দু’পাশে এখন আলো বসানোর কাজ চলছে।
লকডাউনের মধ্যেই জার্মানি থেকে এসে পৌঁছনোর কথা ছিল সিগন্যাল সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সরঞ্জামের। দু’টি ট্রেনের কাছাকাছি চলে আসা বা মুখোমুখি সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতি এড়াতে ওই পথে ট্রেন প্রোটেকশন ওয়ার্নিং সিস্টেম (টি পি ডব্লিউ এস) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। তারই বিভিন্ন সরঞ্জাম জার্মানি থেকে আসার কথা ছিল। লকডাউনে আমদানি সংক্রান্ত বিধি-নিষেধের গেরোয় সেই প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। ওই সব সরঞ্জাম বসিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষ করতে চলতি বছর গড়িয়ে যেতে পারে বলে সূত্রের খবর।
যদিও মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশী বুধবার বলেন, “চলতি বছরের ডিসেম্বরেই অবশিষ্ট কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।” কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া, উত্তর-দক্ষিণ পুরো মেট্রোপথেই এখন ট্রেন চলে। তারই সম্প্রসারিত অংশ নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত চার কিলোমিটার মেট্রোপথে খুব দীর্ঘ মহড়া প্রয়োজন হবে না বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত সশস্ত্র পুলিশের ইনস্পেক্টর
ওই পথে মেট্রো চালু হলে স্বাভাবিক অবস্থায় দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ৫০-৬০ হাজার পর্যন্ত বৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী ছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রী-সংখ্যা বৃদ্ধির পরিসংখ্যান কোথায় ঠেকবে, তা স্পষ্ট নয়। যাত্রীর চাপ সামলাতে ডানলপ সংলগ্ন বরাহনগর স্টেশনটি প্রশস্ত করা হয়েছে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের নির্মাণ শৈলীর সঙ্গে সাযুজ্য রেখে গড়ে তোলা হয়েছে মেট্রো স্টেশনের কাঠামো। তবে স্টেশনের পিছনে জায়গা না মেলায় ট্রেন ঘোরানোয় অসুবিধা থেকে যাবে। পরিস্থিতি সামলাতে পর্যায়ক্রমে ওই স্টেশনের আপ এবং ডাউন প্ল্যাটফর্ম থেকে মেট্রো ছাড়বে।