—প্রতীকী চিত্র।
জোকা-এসপ্লানেড মেট্রোপথে মোমিনপুর থেকে শুরু হবে ভূগর্ভস্থ অংশ। মোমিনপুর থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হয়ে এসপ্লানেড পর্যন্ত যাবে মেট্রোর সুড়ঙ্গপথ। এর মধ্যে প্রথম পর্বে মোমিনপুর থেকে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত অংশে দ্রুত সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু করতে চলেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এই কাজের জন্য মোমিনপুর সংলগ্ন সেন্ট টমাস স্কুলে মাটির নির্দিষ্ট গভীরতায় টানেল বোরিং মেশিন বা টিবিএম নামানো হবে। সে জন্য স্কুল চত্বরেই চতুষ্কোণ গর্ত বা ‘লঞ্চিং শ্যাফট’ তৈরির কাজ চলছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, খুব তাড়াতাড়ি মোমিনপুর থেকে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত অংশে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে।
এই কাজের পাশাপাশি ময়দানে ভূগর্ভস্থ স্টেশন নির্মাণের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দেখা দিয়েছিল ২৯টি পূর্ণবয়স্ক গাছের কাটা পড়ার আশঙ্কা। একাধিক পরিবেশপ্রেমী সংগঠন এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। এই সমস্যার জট কাটাতে আদালতের নির্দেশ মেনে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জোকা ডিপোয় ইতিমধ্যেই ওই সংখ্যার পাঁচ গুণ গাছ লাগিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ২৯টি গাছের পরিপূরক হিসাবে ১৪৫টি গাছ লাগানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, বন দফতরের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া গেলে ময়দানের পূর্ণবয়স্ক গাছগুলিকে প্রতিস্থাপিত করার ব্যবস্থাও করা হবে। ওই সমস্ত গাছ বেলেঘাটা সংলগ্ন কামারডাঙায় প্রতিস্থাপিত করা হতে পারে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। এর আগে একই ভাবে তারাতলার টাঁকশালে কিছু গাছ প্রতিস্থাপিত করা হয়েছিল।
মেট্রোর কাজের জন্য ময়দানের একাধিক ক্লাবের তাঁবু সরানোর প্রয়োজন পড়বে। ওই সমস্ত ক্লাবের অস্থায়ী তাঁবু হিসাবে পাঁচটি অতিকায় কন্টেনার পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন ময়দানে এনে বসানো হয়েছে। মেট্রোর নির্মাণকাজের জন্য কলকাতা পুলিশ ক্লাব, কেনেল ক্লাব এবং রাজস্থান ক্লাবকে সাময়িক ভাবে ময়দানের এলাকা ছেড়ে দিতে হচ্ছে। নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হলে ক্লাবগুলি আবার তাদের আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারবে। এ ছাড়াও কলকাতা মাউন্টেড পুলিশের (ঘোড়সওয়ার পুলিশ) অনুশীলনের মাঠ বা প্যাডক সাময়িক ভাবে সরিয়ে শহিদ মিনার ময়দানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেই প্রস্তুতিও চলছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, পার্ক স্ট্রিট থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত অংশে মাটি খুঁড়ে উপর থেকে কাট অ্যান্ড কভার পদ্ধতিতে সুড়ঙ্গ নির্মাণের জন্য পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুল সংলগ্ন মনোহরদাস তড়াগের জল শুকিয়ে ফেলে খননকাজ চালানো হবে। ওই জলাশয়ে শোভা বৃদ্ধির জন্য একাধিক ফোয়ারা বসানো রয়েছে। মেট্রো নির্মাণের পরে আবার ওই জলাশয়কে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই ওই জলাশয় মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের হাতে তুলে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র।