দূষণ: গার্ডেনরিচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের প্রবেশপথের পাশে জমে রয়েছে চিকিৎসা বর্জ্য। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালের গেটের সামনেই জমে রয়েছে স্তূপীকৃত চিকিৎসা বর্জ্যের প্যাকেট। অধিকাংশ প্যাকেটই ফুটো হয়ে গিয়ে সিরিঞ্জ, তুলো, ব্যান্ডেজ বেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এই ভাবে চিকিৎসা বর্জ্য পড়ে থাকায় এলাকা দূষিত হচ্ছে। শহরের বাইরে কোথাও নয়, এই দৃশ্য দেখা গেল গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।
গার্ডেনরিচের স্টেট জেনারেল হাসপাতাল গত বছর থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ওই হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা ৩০০টি। স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পুরনো ভবনের পিছনেই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের জন্য নতুন চারতলা ভবন তৈরি করা হয়েছে। পুরনো ভবনটি এখন প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করা হয়। নতুন ভবনে ঢুকতে হলে পুরনো ভবনের পাশ দিয়েই যেতে হয়। অভিযোগ, স্টেট জেনারেলের গেটের পাশেই দিনের পর দিন চিকিৎসা বর্জ্য ফেলে রাখা হচ্ছে।
হাসপাতালের পাশেই রয়েছে নাদিয়াল থানা। সেখানে প্রতিদিন বহু মানুষের যাতায়াত। সামনেই খোলা জায়গায় চিকিৎসা বর্জ্য পড়ে থাকায় অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেকেই। হাসপাতালটি কলকাতা পুরসভার ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। সেখানকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) মইনুল হক চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘সুপার স্পেশ্যালিটি বলা হলেও এখনও হাসপাতালের অনেক কাজ বাকি। চিকিৎসা বর্জ্য ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকা দরকার। এই ধরনের বর্জ্য নিয়মিত সাফাই হওয়া উচিত। তা না হওয়ায় এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খোলা জায়গায় চিকিৎসা বর্জ্য পড়ে থাকায় সেগুলি কাক, কুকুর এসে টেনে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র ফেলছে। পুঁজ মাখা তুলো, ব্যান্ডেজ, পরিত্যক্ত সিরিঞ্জ যেখানে সেখানে পড়ে থাকায় বিপদ বাড়ছে। এই পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা হাসপাতালের রোগী-কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি মমতাজ বেগম। তাঁর কথায়, ‘‘হাসপাতালের সামনে চিকিৎসা বর্জ্য পড়ে থাকা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারাও আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি গুরুতর। তাই সুপারকে বলেছি, হাসপাতালের সমস্ত কর্মীকে নিয়ে বৈঠক ডাকতে। আমি বৈঠকে থাকব।’’
উন্মুক্ত জায়গায় দিনের পর দিন চিকিৎসা বর্জ্য পড়ে থাকা কি পরিবেশের পক্ষে খারাপ নয়? গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার শুভব্রত দত্ত বলেন, ‘‘এ বিষয়ে সহকারী সুপারের সঙ্গে কথা বলুন।’’ সহকারী সুপার চম্পা চৌধুরী বলেন, ‘‘চিকিৎসা বর্জ্য রাখার জন্য তিনটি ঘর তৈরি হলেও তার গেট বসানো হয়নি। পূর্ত দফতরের তরফে ওই গেট বসানো হলে চিকিৎসা বর্জ্য রাখার সমস্যা মিটে যাবে।’’ গেট বসানো হয়নি বলে হাসপাতালের সামনে খোলা জায়গায় চিকিৎসা বর্জ্য ফেলা হবে? সহকারী সুপারের দাবি, ‘‘চিকিৎসা বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্য গাড়ি আসে। ওই গাড়ি নিয়মিত না আসায় সমস্যা হচ্ছে।’’