ভাঙাচোরা: এমনই হাল ইএম বাইপাসের। ছবি: রণজিৎ নন্দী
উত্তর থেকে দক্ষিণ— শহর জুড়ে বেহাল অবস্থা বিভিন্ন রাস্তার। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, বৃষ্টি হলেই রাস্তা নষ্ট হয়। তবে মেয়রের ইঙ্গিত, পুরসভার রাস্তার চেয়ে এ বার অন্যান্য সংস্থার রাস্তার হালই বেশি খারাপ। তাঁর কথায়, ‘‘সব রাস্তা পুরসভার নয়। নোডাল এজেন্সি হিসেবে পুরসভা সবটা দেখে। তাই অন্য সব এজেন্সিকে ডেকে বলা হয়েছে, রাস্তা সারান। না পারলে পুরসভাকে জানান। পুরসভা সাময়িক ভাবে সারিয়ে দেবে। তবে স্থায়ী ভাবে সারানোর দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে। এবং পুজোর আগেই।’’
চলতি বর্ষায় শহরের একের পর এক রাস্তার হাল নিয়ে অভিযোগ আসছে। যা নিয়ে উদ্বেগে পুর প্রশাসন। যে সব সংস্থার হাতে বেশ কিছু রাস্তার মালিকানা রয়েছে, তাদের নিয়ে সোমবার পুরভবনে বৈঠকে বসেন শোভনবাবু। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বাঁধা সুরেরই পুনরাবৃত্তি করে শোভনবাবু বলেন, ‘‘কে কোন রাস্তার মালিক, তা দেখতে চাই না। রাস্তা সারাতে কে কী ভূমিকা নিচ্ছে, সেটা পুরসভাকে জানাতে হবে। কারণ, শহরের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ পুর প্রশাসন।’’ ওই বৈঠকে কেন্দ্রের অধীনে থাকা মেট্রো রেল, কলকাতা বন্দর, আরভিএনএল এবং টেলিফোন নিগমের মতো সংস্থা ছাড়াও রাজ্য সরকারের পূর্ত, কেএমডিএ, এইচআরবিসি, সেচ, কেইআইআইপি-সহ সিইএসসি, পুলিশ এবং পুরসভার পদস্থ কর্তারাও হাজির ছিলেন।
বৈঠকে ই এম বাইপাস এবং ডায়মন্ড হারবার রোডের প্রসঙ্গ ওঠে। বলা হয়, ওই দুটো রাস্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ, বৃষ্টির পরে ওই দুই রাস্তারই হাল খুব খারাপ।
বাদ যায়নি পুরসভার নিজস্ব রাস্তাও। উত্তর থেকে দক্ষিণে অনেক রাস্তা এখন খানাখন্দে ভর্তি। বেহাল ট্রামলাইনও। একাধিক পুর ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, চলতি বছরে যে ভাবে খানাখন্দ বাড়ছে, এতটা আগে হয়নি। রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। মেয়র বলেছেন, ‘‘১৪৪টি ওয়ার্ডের রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই মতো যার যেখানে রাস্তা রয়েছে, তা সারাতে বলা হয়েছে।’’
বন্দর কর্তৃপক্ষকে মেয়র বলেছেন, সেখানে ভারী মালবাহী গাড়ি চলে। সেই ভারে এই বর্ষায় রাস্তার ক্ষয় বাড়ছে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামতি প্রয়োজন। ওই রাস্তার পাশে নিকাশি নালা না থাকায় জল জমে থাকে। তাতে রাস্তা আরও খারাপ হয়। মেট্রোর কাজের জন্য ডায়মন্ড হারবার রোডের বেহাল দশা নিয়েও আলোচনা হয়। মেয়র মেট্রোকর্তাদের জানান, ওখানে ৬টি স্টেশন এলাকায় অনেক মালপত্র পড়ে রয়েছে। তা সাফ করা প্রয়োজন। পুলিশকেও বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে মেট্রোকে সাহায্য করতে।
মেয়র বলেন, ‘‘১০-১২ দিনের মধ্যেই খানাখন্দ বোজাতে বলা হয়েছে। পুরসভার মালপত্র নিয়ে ওই সংস্থাগুলি রাস্তা সারাতে পারে। এর জন্য কত টাকা দিতে হবে, তা পরে ঠিক হবে।’’ তিনি জানান, সায়েন্স সিটির কাছে রাস্তায় জমা জলের সমস্যা মেটাতে ছ’কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেএমডিএ। বর্ষার পরেই সেই কাজ হবে।
কলকাতার রাজনীতি, কলকাতার আড্ডা, কলকাতার ময়দান, কলকাতার ফুটপাথ - কলকাতার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।