প্রতীকী ছবি।
কোনও বিষয়ে পড়ুয়াদের আগ্রহ এবং পরীক্ষায় তাঁদের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাদানের পদ্ধতির উপরে। তাই স্কুলের কোনও ছাত্র বা ছাত্রী এক বা একাধিক বিষয়ে পিছিয়ে পড়লে খামতি পুষিয়ে তাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব বর্তায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের উপরেও। সে কথা মাথায় রেখেই পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের পড়াশোনায় বিশেষ নজর দিচ্ছে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। উদ্দেশ্য, এই পড়ুয়াদের শিক্ষাক্ষেত্রে সামনের সারিতে আনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্র বলেন, ‘‘প্রথম সিমেস্টার থেকেই পড়ুয়াদের মার্কশিট খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করবেন কলেজের শিক্ষকেরা। পরবর্তী পর্যায়ে সেগুলি বিশ্লেষণ করবে বিশ্ববিদ্যালয়। এই কাজের জন্য হচ্ছে একটি কমিটি তৈরি করা।’’
সূত্রের খবর, কলেজের তরফে যদি কোনও খামতি দেখা যায়, তা হলে সেটাও জানিয়ে দেবেন কমিটির সদস্যেরা। এই পদ্ধতিতে এগোনোর পরে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সিমেস্টারের জন্য তৈরি করতে হবে। কোনও ছাত্র বা ছাত্রী যেন পিছিয়ে না পড়েন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সংশ্লিষ্ট কলেজকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হবে। তার আগে পর্যন্ত ওই সব পড়ুয়াদের জন্য নিরন্তর চেষ্টা করে যেতে হবে কলেজের শিক্ষকদেরই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে এই রাজ্যের প্রায় দুশোটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, সিমেস্টারের ফল প্রকাশের আগে থেকেই ক্লাসে পড়ুয়াদের পড়াশোনা ও ফলাফলের বিষয়ে নজর রাখতে হবে। কোন পড়ুয়ারা কেন কোনও বিষয়ে আগ্রহী হচ্ছেন না বা কোনও বিষয়ে কেন পিছিয়ে পড়ছেন, তার কারণ সন্ধান ও মূল্যায়ন করতে হবে। সিমেস্টারের ফল প্রকাশের পরে তৈরি করতে হবে বিশেষ রিপোর্ট। সেখানে ওই পড়ুয়ারা কেন পিছিয়ে পড়লেন, তার কারণ উল্লেখ করতে হবে। পাঠ্যক্রমের চাহিদা অনুযায়ী তাঁদের ঠিকমতো তৈরি করতে বিশেষ ক্লাস করাতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক বার প্রশিক্ষণও দিতে হবে। এই দায় থেকে কলেজ যাতে কোনও ভাবেই পিছিয়ে না আসে, তার উপরেও নজর রাখবে বিশ্ববিদ্যালয়।
উপাচার্য বলেন, ‘‘কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের চাকরির জন্যও উপযুক্ত করে তুলতে হয়। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যাতে কোনও শিক্ষার্থীই বঞ্চিত না হন, সে জন্যেই পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন।’’
অতীতে স্কুলপড়ুয়াদের উপরে বাড়তি নজর দেওয়ার দাবি তুলেছিল শিক্ষা মহল। স্কুল পেরিয়ে কলেজ পর্যায়ে গিয়েই দেখা যায়, অনেক ছাত্রছাত্রী আটকে যাচ্ছে, ঠিকমতো পাঠ্যক্রম বুঝতে পারছে না। তার ছাপ পড়ে ফলাফলে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে চাকরির বাজারেও। সেই জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কলেজ স্তরে পিছিয়ে পড়ার প্রবণতা আটকাতে গেলে স্কুল স্তর থেকেই নজরদারি শুরু করা দরকার। কিন্তু শিক্ষকেরা বলছেন, বহু স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ঠিক নেই। আর সে জন্যই এই বাড়তি মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। এ বার অন্তত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলি এই পদক্ষেপ করবে ভেবে আশায় অভিভাবকেরা।