Fire

চোখের সামনে ছাই একাধিক দোকান, প্রশ্নে পঞ্চায়েতের ভূমিকা

ঘটনার রাতে আগুনের যে ছবি দেখা গিয়েছে, দিনের বেলা তেমন ঘটলে বড় বিপদ হতে পারত বলেই মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:০১
Share:

লেলিহান: জ্বলছে পর পর ঝুপড়ি দোকান। সোমবার রাতে, নিউ টাউনের গৌরাঙ্গনগর বাজারে। নিজস্ব চিত্র

বাঁশের কাঠামো, দরমা, পলিথিন— মজুত রয়েছে অতি দাহ্য যাবতীয় সরঞ্জাম। দোকানিরা জানেন, সরকারি জায়গা থেকে যে কোনও সময়ে তাঁদের সরে যেতে হবে। তাই দোকানের পাকা গাঁথনি করেননি কেউ। কিন্তু দাহ্য বস্তু দিয়ে দোকান তৈরির ফল কী হতে পারে, সোমবার শেষ রাতে তা টের পেলেন নিউ টাউনের গৌরাঙ্গনগর এলাকার কয়েক জন দোকানদার। আগুন লেগে প্রায় ২৫টি ঝুপড়ি দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেল সেখানে। যার পরে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) নম্বর পঞ্চায়েতের নজরদারি ব্যবস্থা নিয়েও।

Advertisement

ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি ঠিকই, কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও গৌরাঙ্গনগর নিউ টাউনের অধীনে শহর এলাকার মতোই অত্যন্ত জনবহুল। ঘটনার রাতে আগুনের যে ছবি দেখা গিয়েছে, দিনের বেলা তেমন ঘটলে বড় বিপদ হতে পারত বলেই মনে করছেন অনেকে।

বাগজোলা খালের পাড় ধরে গজিয়ে ওঠা ওই সব ঝুপড়ি দোকানের নিজস্ব মিটার রয়েছে। দমকলের প্রাথমিক ধারণা, শর্ট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকাণ্ড। যদিও স্থানীয় সূত্রের খবর, একটি মাংসের দোকানে উনুন জ্বালানো ছিল। সেখান থেকেই আগুন ধরে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত এক দোকানি শঙ্করী মণ্ডল বলেন, ‘‘১২ বছরে ধরে আমার দোকান রয়েছে এখানে। কখনও এমন ঘটেনি। সব মালপত্র পুড়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরেই শাসকদল তথা পঞ্চায়েতের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। পরবর্তী কালে দোকান তৈরির সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করার শর্তও দেওয়া হয়েছে।

যদিও প্রশ্ন উঠেছে, কেন দুর্ঘটনা ঘটার পরে ঘুম ভাঙবে পঞ্চায়েতের? সূত্রের খবর, শাসকদলের নেতাদের একাংশের মদতে গৌরাঙ্গনগর, বিবেকানন্দপল্লি, জগৎপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় পুনর্বাসন পাওয়া উদ্বাস্তুদের একটি বড় অংশ ওই সব দোকানে ব্যবসা করেন। তাঁরাই দোকান বসান, খালপাড়ে লোকজনকে ঘর তৈরিও করতে দেন।

কেন দোকানদারদের এ ভাবে বসতে দেওয়া হয়েছে? জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) পঞ্চায়েতের প্রধান শিবু গায়েন মেনে নিয়েছেন দাহ্য বস্তু দিয়ে ওই সব দোকান তৈরির কথা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বহু বার সতর্ক করেছি ব্যবসায়ীদের। কিন্তু তাঁরা নিজেদের মতো করে বসে পড়েন।’’

যদিও নিউ টাউন বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, সেচ দফতরের জমির উপরে থাকা ওই দোকানদারদের পুনর্বাসন নিয়ে ভাবা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এটা সারা দেশের সমস্যা। এখন একটা বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। গরিব মানুষদের সাহায্য তো করতেই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement