—ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ অতিমারি পরিস্থিতি পেরিয়ে খুলেছে স্কুল। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পড়াশোনা। এখন আর পর্যায়ক্রমে নয়, বেশির ভাগ স্কুলেই প্রতিদিন আসছে সব শ্রেণির পড়ুয়ারা। এই অবস্থায় তাদের উপরে নজরদারির জন্য স্কুলে উন্নত মানের সিসি ক্যামেরা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন প্রধান শিক্ষকেরা।
তবে কলকাতার কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে সিসি ক্যামেরাই নেই। কিছু স্কুল আবার জানাচ্ছে, তাদের ক্যামেরা থাকলেও সেগুলির প্রযুক্তি এত পুরনো যে, তাতে স্পষ্ট ছবি ওঠে না। অবিলম্বে ক্যামেরাগুলি সারাই করা প্রয়োজন। কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা আবার জানাচ্ছেন, আমপানের তাণ্ডবে স্কুলে থাকা সিসি ক্যামেরার লাইন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় যাতে শিক্ষা দফতর থেকেই খারাপ ক্যামেরাগুলি সারাই করার ব্যবস্থা করা হয় অথবা নতুন ক্যামেরা লাগানো হয়, সেই আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
খিদিরপুর অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সালেহিন বলেন, “শিক্ষা দফতরের নির্দেশ আছে, পড়ুয়ারা স্কুলে করোনা-বিধি মেনে চলছে কি না, সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। শিক্ষকেরা যখন ক্লাসে থাকছেন, তখন তা দেখা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু বারান্দায় বা ফাঁকা ক্লাসে সব সময়ে নজর রাখা সম্ভব নয়। ক্যামেরা থাকলে সুবিধা হয়। স্কুলে ক্যামেরা লাগানোর জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে আবেদন জানিয়েছি।’’ ওয়াটগঞ্জের বঙ্কিম ঘোষ মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জয়তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের স্কুলে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু মূল মেশিনটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে তা কাজ করছে না। তাঁর কথায়, “শুধু কোভিড-বিধির উপরে নজর রাখার জন্যই নয়, ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেও ক্যামেরা দরকার।’’ খিদিরপুর বালিকা বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষিকা মণিদীপা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের স্কুলে সিসি ক্যামেরা নেই। ২৪০ টাকা বেতনে মেয়েরা পড়ে। স্কুল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে সামান্য টাকা পাওয়া যায়, তা দিয়ে স্কুলের পক্ষে ক্যামেরা লাগানো সম্ভব নয়। মণিদীপাদেবী বলেন, ‘‘বিশেষত ক্লাসঘর এবং বারান্দায় ক্যামেরা বসানো জরুরি। শিক্ষা দফতর থেকে ব্যবস্থা করে দিলে ভাল হয়।’’
বেহালা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বেরা আবার জানালেন, তাঁদের স্কুলে ২০১২ থেকে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু আমপানে ক্যামেরার তার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মেরামতি করে চালু করার পরে দেখা যাচ্ছে, ক্যামেরার শব্দ বা ছবি কিছুই স্পষ্ট নয়। দেবাশিসবাবু বলেন, “জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানিয়েছি, শিক্ষা দফতরের তরফে ক্যামেরা মেরামত করে দিলে ভাল হয়। ২৪০ টাকা ফি নিয়ে স্কুলের পক্ষে ক্যামেরার রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব নয়। অথচ এখন ক্যামেরা ভীষণ জরুরি।’’ যে সব স্কুলে ছাত্র-সংখ্যা বেশি, সেখানে সিসি ক্যামেরার বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকে। তাই এই ধরনের স্কুলগুলিতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শিক্ষা দফতর থেকে সিসি ক্যামেরা দিলে ভাল হয় বলে মনে করছেন প্রধান শিক্ষকদের একাংশ।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষাকর্তা জানান, স্কুলের তরফেই তহবিল বাড়িয়ে নতুন ক্যামেরা লাগানো বা অকেজো ক্যামেরা মেরামতি করে নেওয়া বাঞ্ছনীয় হবে।