ফাইল চিত্র।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে ১৫-১৮ বছর বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে। গত তিন দিনে অনেকেই প্রথম ডোজ় পেয়ে গিয়েছে। প্রথম দিন কলকাতা পুরসভার ১৬টি বরোর প্রতিটিতে একটি করে স্কুলে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। তার পরে স্কুলের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু কলকাতা ও জেলার বেশ কিছু স্কুলের কর্তৃপক্ষেরা জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে এখনও ১৫-১৮ বছর বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়নি। কবে তা শুরু হবে, সেই সংক্রান্ত লিখিত নির্দেশও তাঁরা পাননি। সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির কর্তৃপক্ষ আরও জানাচ্ছেন, তাঁদের নিকটবর্তী স্কুলে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে তাঁদের স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা চিন্তিত। যদিও শিক্ষা দফতরের এক কর্তার আশ্বাস, ১৫-১৮ বছর বয়সিরা কেউ প্রতিষেধকের আওতা থেকে বাদ পড়বে না।
কলকাতা জেলার শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, “এ নিয়ে চিন্তার কারণ নেই। সব স্কুলকে প্রতিষেধক-কেন্দ্র করা সম্ভব না-ও হতে পারে। কলকাতা পুরসভার ১৬টি বরো মিলিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল পাঁচশোর বেশি। প্রতিটি বরো থেকে কয়েকটি করে স্কুল, যেখানে পরিকাঠামো ভাল, সেগুলিকে প্রতিষেধক-কেন্দ্র করা হচ্ছে। ওই স্কুলের আশপাশে থাকা কিছু স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সেখানে গিয়ে প্রতিষেধক নিতে বলা হবে। শীঘ্রই এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে।’’
শুধু কলকাতা শহরেই নয়, জেলার বিভিন্ন স্কুলেও এখনও প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন ওই স্কুলগুলির কর্তৃপক্ষ। সোনারপুরের একটি স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত দত্ত জানান, তাঁদের স্কুলে কবে থেকে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হবে তা নিয়ে তাঁরা এখনও কোনও লিখিত নির্দেশ পাননি। নামখানার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রনীল প্রধান জানালেন, তাঁদের স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়া সংখ্যা সাড়ে চারশোর উপরে। তাদের কবে থেকে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হবে, সেই বিষয়ে তাঁরা এখনও কিছু জানতে পারেননি। নদিয়ার করিমপুর ব্লকের একটি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রমা মণ্ডলেরও প্রশ্ন, ‘‘আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা কবে থেকে প্রতিষেধক পাবে, সেটা জানতে পারলে সুবিধা হত। অভিভাবকেরাও আশ্বস্ত হতেন।’’ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের এক শিক্ষা কর্তা বলেন, “জেলার প্রতিটি ব্লকে পর্যায়ক্রমে প্রতিষেধক প্রদান কর্মসূচি হবে। কোন স্কুলে কবে হবে, তা সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে দেওয়া হবে। কোনও স্কুলের পড়ুয়াকে যদি অন্য স্কুলে গিয়ে প্রতিষেধক নিতে হয়, স্কুল কর্তৃপক্ষকে তা-ও জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
প্রশ্ন উঠেছে প্রতিষেধক নেওয়ার ফি নিয়েও। শহরের কিছু বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের দাবি, তাঁদের ছেলেমেয়েদের প্রতিষেধক নিতে ১২০০ টাকা লাগছে। কিন্তু, কিছু বেসরকারি স্কুলে প্রতিষেধক মিলছে নিখরচায়। অভিভাবকদের প্রশ্ন, প্রতিষেধক দেওয়া নিয়েও এই বৈষম্য কেন? যে সব বেসরকারি স্কুলে প্রতিষেধক নিতে টাকা লাগছে, তাদের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রথমে তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন। তাই প্রতিষেধক নিতে টাকা লাগছিল। পরবর্তী পর্যায়ে তাঁরা কলকাতা পুরসভার সঙ্গে সহযোগিতায় বিনামূল্যে পড়ুয়াদের প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। দিল্লি পাবলিক স্কুল, রুবি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই বিনামূল্যে পড়ুয়াদের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু করেছেন। বুধবার, প্রথম দিন ২০০ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে স্কুলের ২০০০ পড়ুয়া প্রতিষেধক পাবে।