— ছবি সংগৃহীত
স্থায়ীকরণ, বেতন বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ চুক্তিভিত্তিক কর্মী ঐক্য মঞ্চের সদস্যেরা। তার জেরে বিদ্যুৎ ভবনের ভিতরে আটকে পড়েন বহু কর্মী থেকে আধিকারিক। বাদ পড়েননি মহিলা কর্মচারীরাও। রাতে তাঁদের অফিস থেকে বাইরে বার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ৪১ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শনিবার বিধাননগর আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান ধৃতেরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ লাঠি চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করেছে তাঁদের। পুলিশের লাঠির ঘায়ে একাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। তাঁদের কয়েক জন হাসপাতালেও ভর্তি। যদিও লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকাল থেকে কয়েক হাজার ঠিকা ও চুক্তিভিত্তিক বিদ্যুৎকর্মী বিক্ষোভ করছিলেন। বিদ্যুৎ পর্ষদে তাঁরা তাঁদের দাবি নিয়ে স্মারকলিপিও দেন। অভিযোগ, আলোচনায় রফাসূত্র মেলেনি, এমন দাবি তুলে রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎকর্মীদের ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা।
আটকে থাকা কর্মী, আধিকারিকদের কিছুতেই অফিস থেকে বার করা যাচ্ছিল না। ঘটনাস্থলে হাজির হয় বিধাননগর পুলিশের বিশাল বাহিনী। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীদের বার বার সরে যেতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে রাজি ছিলেন না বিক্ষোভকারীরা। এর পরে রাতে পুলিশ আটকে থাকা বিদ্যুৎকর্মীদের উদ্ধার করে বাইরে বেরোতে গেলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় পুলিশ যথেচ্ছ লাঠি চালিয়েছে তাঁদের উপরে।
পুলিশের একাংশের দাবি, অনেক রাত পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরা অফিস থেকে বেরোতে পারছিলেন না। গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এর পরে অনেক রাতে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে অফিস থেকে বার করে নিয়ে আসা হয় সরকারি কর্মীদের। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীদের আটকে রাখা, কাজে বাধা দান, হেনস্থার মতো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নানা স্তরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা বিদ্যুৎ ভবনে জমায়েতের ডাক দেন। কিন্তু শুক্রবার কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেননি পর্ষদ কর্তৃপক্ষ। তাই অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। যদিও শুক্রবারই বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, দাবি বিবেচনার জন্য সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সে কথা মানতে চাননি। তবু তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎকর্মীদের একাংশ জানান, দাবি নিয়ে আন্দোলনের নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ ভাবে আটকে রাখায় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বহু মহিলা কর্মীও আটকে পড়েন। বিক্ষোভকারীদের পাল্টা দাবি, বলপূর্বক তাঁদের শান্তিপূর্ণ জমায়েত ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। আগামী দিনে প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।