Chhath Puja 2022

ছট মিটে গেলেও যত্রতত্র পড়ে বর্জ্য, উঠছে প্রশ্ন

বাস্তব ছবিটা অবশ্য অন্য কথা বলছে। মঙ্গলবার দইঘাট, বাবুঘাট থেকে শুরু করে বাগবাজার-সহ গঙ্গার একাধিক ঘাট ঘুরে দেখা গেল, পাড় বরাবর পড়ে রয়েছে ছটপুজোর সামগ্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৫৩
Share:

অবহেলা: ছটের পুণ্যার্থীদের ব্যবহৃত থার্মোকলের থালা-বাটিতে ভরে রয়েছে ময়দান। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ছটপুজো শেষ হওয়ার পরে কেটে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। তবু গঙ্গার ঘাট থেকে শুরু করে অস্থায়ী একাধিক ঘাট, ময়দান চত্বর— সর্বত্র এখনও পড়ে ছটে ব্যবহৃত ফুল, বেলপাতা, নারকেল, কলার উচ্ছিষ্ট। কোথাও আবার মাঠ জুড়ে পড়ে থার্মোকলের প্লেট। তাই উৎসবের পরে ঘাট থেকে শুরু করে শহর পরিষ্কারের ক্ষেত্রে পুরসভার শম্বুক গতি প্রশ্ন তুলছে নানা মহলে। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত শেষ হবে।’’

Advertisement

বাস্তব ছবিটা অবশ্য অন্য কথা বলছে। মঙ্গলবার দইঘাট, বাবুঘাট থেকে শুরু করে বাগবাজার-সহ গঙ্গার একাধিক ঘাট ঘুরে দেখা গেল, পাড় বরাবর পড়ে রয়েছে ছটপুজোর সামগ্রী। কোনও ঘাটের পাশে স্তূপাকার করে রাখা পুজোর ফুল ও অন্যান্য সামগ্রী। কোনও ঘাটে আবার সেটাও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এ দিন দুপুরে দইঘাট চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ফুল, বেলপাতা, কলার উচ্ছিষ্ট। ঘাটে আসা মানুষের পায়ে পায়ে তা আরও ছড়িয়ে যাচ্ছে। চত্বরে দেখা মিলল না পুরসভার কোনও সাফাইকর্মীর। স্থানীয়দের দাবি, ঘাট চত্বর পরিষ্কার করতে সকাল থেকে কোনও পুরকর্মীর দেখা মেলেনি।

কার্যত একই ছবি বাবুঘাট এবং বাজেকদমতলা ঘাটেও। এমনকি গঙ্গার পাড় সংলগ্ন রাস্তাতেও ছড়িয়ে রয়েছে পুজোর উপচারের সামগ্রী। ইডেন গার্ডেন্স সংলগ্ন ময়দান জুড়েও এ দিন পড়ে থাকতে দেখা গেল থার্মোকলের প্লেট। সামনের রাস্তায় কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘গঙ্গার ঘাটে ছটের জন্য আসা গাড়িগুলিকে এখানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পুজো-পর্ব মেটার পরে অনেক পুণ্যার্থী খাওয়াদাওয়া করেছেন। তার পর থেকে এ ভাবেই রয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

ছটের জন্য শহরের একাধিক এলাকায় তৈরি হওয়া অস্থায়ী ঘাট সংলগ্ন এলাকার পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কাদাপাড়া, নারকেলডাঙা মেন রোড, বেলেঘাটা, তপসিয়া, তিলজলা, আলিপুর-সহ একাধিক জায়গার অস্থায়ী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় পুজোর সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি জায়গায় সাফাইকাজ হলেও বেশির ভাগ জায়গাতেই এখনও পুরসভার সাফাইকর্মীদের হাতই পড়েনি বলে অভিযোগ।

গঙ্গাদূষণ থেকে শুরু করে শহরের পরিচ্ছন্নতার মতো বিষয় ভোট-রাজনীতিতে বার বার সামনে এসেছে। কিন্তু উৎসবের শেষে দীর্ঘ সময় পরেও অপরিচ্ছন্নতার এই ছবি কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। পরিবেশকর্মীদের একাংশেরও প্রশ্ন, ময়দান বা সংলগ্ন এলাকায় কোনও রাজনৈতিক সভার পরে মাঠ পরিষ্কারের তৎপরতা কেন উৎসবের শেষে দেখা যাবে না? পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘আসলে প্রশাসনের কতটা ইচ্ছে রয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। সব কিছু মামলা করে বলবৎ করতে হবে, এটা তো হতে পারে না। প্রশাসনকেও এগিয়ে আসতে হবে।’’

যদিও কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বললেন, ‘‘আগে থেকেই পুরকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। শহরের বেশির ভাগ জায়গায় এ দিন সাফাইকাজ করা হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত শেষ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement