হাওড়া, শিয়ালদহ এবং হাজরা মোড় থেকে বেরোনো তিনটি মিছিলের জেরে যানজটে আটকে ভোগান্তির শিকার হলেন অসংখ্য মানুষ। শুক্রবারের ওই তিনটি মিছিলের আয়োজক ছিল ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’। বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) এবং শূন্য পদে নিয়োগের দাবিতে পূর্ব ঘোষণা মতোই এ দিন বেলা ১২টার পরে হাজরা, হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে তিনটি মিছিল শহিদ মিনারের দিকে এগোয়।
লালবাজারও জানিয়েছে, এ দিন মিছিল ধর্মতলার দিকে যত এগিয়েছে, ততই যানজটে থমকে গিয়েছে বিভিন্ন রাস্তা। তখন বিকল্প রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে অবস্থা সামলানোর চেষ্টা হয়েছে। তবে, পথে বেরোনো জনগণের অভিযোগ, বিকল্প রাস্তা ধরেও গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যায়। সূত্রের খবর, শিয়ালদহ এবং হাজরার মিছিল ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত সময়েই পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, পুলিশ হাওড়ার মিছিলের পথ আটকেছে। শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলাগামী মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা এর প্রতিবাদে ডোরিনা ক্রসিংয়ে বসে পড়েন। যার জেরে শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা ২০ মিনিট অবরুদ্ধ থাকে। এর ফলে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এসএন ব্যানার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোডে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। মিছিল শহিদ মিনারের দিকে রওনা দিলে ধর্মতলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
লালবাজার জানিয়েছে, হাজরা মোড়ের মিছিল আশুতোষ মুখার্জি রোড দিয়ে ধর্মতলার দিকে এগোতেই ওই রাস্তায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। মিছিলের গতি ধীর হওয়ায় পিছনে গাড়ির দীর্ঘ সারি তখন অপেক্ষায় থাকে। যার প্রভাব পড়ে রাসবিহারীর মোড় পর্যন্ত। অভিযোগ, ওই মিছিল রাস্তা জুড়ে চললেও পুলিশ বিকল্প রাস্তায় গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়নি। যে কারণে ভোগান্তি বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাজরা থেকে ধর্মতলাগামী মিছিলের গতি আচমকা কমে যায় এক্সাইড মোড়ের কাছে। সেই কারণে জওহরলাল নেহরু রোড, এ জে সি বসু রোডে যানবাহন থমকে যায়। এক্সাইড মোড়ে আটকে পড়েন অফিসযাত্রী এবং স্কুলপড়ুয়ারাও। এই মিছিলের জেরে শেক্সপিয়র সরণি, উট্রাম রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তায় যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল বাধা পেয়েছে।
শিয়ালদহ থেকে মৌলালি হয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে ধর্মতলাগামী মিছিলের কারণেও এ দিন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। এসএন ব্যানার্জি রোড স্তব্ধ হওয়ায় অনেকেই বাস থেকে নেমে ধর্মতলায় হেঁটে যান। বেলেঘাটা সিআইটি মোড়, মহাত্মা গান্ধী রোড দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করলেও সুবিধা হয়নি পথচলতি মানুষের।
অন্য দিকে, কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী হাওড়া থেকে রওনা দিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় হাওড়া সেতুতে। বহু ক্ষণ যানবাহন থমকে থাকায় অনেককেই দেখা যায়, মালপত্র নিয়ে হেঁটে সেতু পেরিয়ে ট্রেন ধরতে যেতে। পুলিশের দাবি, হাওড়া সেতুতে যান চলাচল বাধা পাওয়ায় তার প্রভাব পড়েছিল স্ট্র্যান্ড রোড, মহাত্মা গান্ধী রোডেও। ওই সব রাস্তায় গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গিয়েছে। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে মহাত্মা গান্ধী রোড হয়ে হাওড়ামুখী গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে পাঠানো হয় ধর্মতলার দিকে। কিন্তু ধর্মতলা এবং স্ট্র্যান্ড রোড অবরুদ্ধ থাকায় তাতেও অবস্থা সামাল দেওয়া যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর তিনটে নাগাদ ওই মিছিল ধর্মতলা পার করলে যান চলাচল কিছুটাস্বাভাবিক হয়।