—প্রতীকী ছবি।
ভোটের দিন গোলমাল হতে পারে, এই আশঙ্কায় ভোটকর্মীর ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে প্রায় সাতশো আবেদনপত্র জমা পড়েছে হাওড়া জেলা প্রশাসনের কাছে। জেলা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা অফিসারদের মতে, এত সংখ্যক আবেদন এর আগে কোনও ভোটে পড়েনি। জমা পড়া আবেদনপত্রের মধ্যে শুধু মহিলা আবেদনকারীর সংখ্যাই সাড়ে পাঁচশো। বাকি দেড়শো আবেদনকারীর মধ্যে পুরুষ আবেদনকারী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আবেদনকারীরা রয়েছেন। এত আবেদনকারীর মধ্যে কত জনকে বাদ দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার নির্বাচনী আধিকারিকেরা।
কোভিড আবহে এ বার হাওড়ায় বাড়ানো হয়েছে বুথের সংখ্যা। মোট বুথ সাড়ে পাঁচ হাজারের কিছু বেশি (৫৫৫৬)। সে কারণে বেড়েছে ভোটকর্মীর চাহিদাও। ৫৫৫৬টি বুথের মধ্যে ৮০০টি বুথ সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত। প্রতিটি বুথে চার জন করে ভোটকর্মীর প্রয়োজন হলে ৩২০০ মহিলা ভোটকর্মী দরকার। অন্য দিকে, সমস্ত বুথ মিলিয়ে প্রয়োজন ২২ হাজারের বেশি ভোটকর্মী। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণের সময়ে দু’হাজার ভোটকর্মী না আসায় নড়ে বসে প্রশাসন। ভোটকর্মীর ডিউটি নিতে না চেয়ে দীর্ঘ লাইন পড়ে জেলা নির্বাচন কার্যালয় নিউ কালেক্টরেট অফিসে। এর পরেই প্রশাসনের তরফে প্রশিক্ষণে অনুপস্থিত কর্মীদের কারণ দর্শাতে বলা হয়। পরবর্তীকালে অবশ্য তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮৬ শতাংশ কর্মী প্রশিক্ষণে যোগ দেন। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে ভোটকর্মী হতে না চেয়ে এত বিপুল আবেদন জমা পড়ায়।
জেলার এক নির্বাচনী আধিকারিক বলেন, ‘‘ভোটকর্মী হতে না চেয়ে এর আগে কখনও এত আবেদন জমা পড়েনি। সম্ভবত, ভোটের দিন গোলমালের আশঙ্কায় এত আবেদন পড়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’’
হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবেদনকারীদের আর্জি খতিয়ে দেখা হবে তিনটি মাপকাঠির ভিত্তিতে। প্রথমত, কোনও মহিলা আবেদনকারীর সন্তানের বয়স দু’বছর বা তার কম হলে তাঁদের আবেদন অনুমোদন করা হবে। দ্বিতীয়ত, ডিউটি থেকে ছাড় পাবেন অন্তঃসত্ত্বারা। তৃতীয়ত কেউ যদি আবেদনে জানান যে, তিনি ও তাঁর স্বামী দু’জনকেই সরকারি কর্মী হওয়ার জন্য ভোটের ডিউটি দেওয়া হয়েছে, অথচ তাঁদের শিশু সন্তান রয়েছে, তাকে দেখভালের জন্য এক জনকে অন্তত অব্যাহতি দেওয়া হোক— তাঁর আবেদনও অনুমোদন করা হবে। এই তিনটি কারণ ছাড়া বাকিদের ক্ষেত্রে আবেদনপত্র গৃহীত হবে না। তাঁদের ভোটের ডিউটি করতেই হবে। পাশাপাশি, আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া প্রামাণ্য নথিও খতিয়ে দেখা হবে। মৌখিক ভাবে কোনও আবেদন গৃহীত হবে না।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, এ বারের নির্বাচনে বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের ভোটকর্মীর ডিউটি থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের তরফেও দলীয় কর্মীদের যাতে ভোটকর্মী না করা হয়, তার জন্য আবেদন জমা পড়েছে। তবে সেগুলি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।