গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
মাটি খুঁড়ে পাওয়া বাদশাহি আমলের সোনার মোহরের নাম করে তামার চাকতি দিয়ে চম্পট দিল প্রতারকরা। তার আগে হাতিয়ে নিল নগদ ৬ লাখ টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে বেনিয়াপুকুরের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাবিভাগের জালিয়াতি দমন শাখা।
বেনিয়াপুকুরের গোবরা রোডের বাসিন্দা কাজি হাফিজুর রহমান কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধানকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, গত মার্চ মাসে রাজু নামে এক যুবক তাঁকে ফোন করেন। রাজুকে তিনি চিনতেন কারণ বছর দুয়েক আগে তাঁর বাড়িতে রঙের কাজ করে গিয়েছিল রাজু। সেই রাজু বীরভূমের বাসিন্দা। তাঁকে রাজু জানায়, একটি জায়গায় মাটি খুঁড়তে গিয়ে বাদশাহী আমলের ৩০০ টি মোহর পেয়েছে সে। বীরভূমের বাজারে বেচতে গেলে পুলিশের কাছে খবর চলে যাবে। তাই রাজু কাজি হাফিজুরকে সেই মোহর কেনার প্রস্তাব দেন।
কলকাতা পুলিশকে অভিযোগকারী জানিয়েছেন, প্রথমে তিনি কিনতে সম্মত হননি। পরে রাজু খুব সস্তায় ওই মোহর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু লকডাউন থাকায় সে কলকাতায় আসতে পারেনি বলে জানায়। জুন মাসের মাঝামাঝি, হাফিজুর রাজুর প্রস্তাব মতো বীরভূম যান। সেখানে রাস্তার ধারে একটি বাথরুম ফি়টিংয়ের দোকানে তিনি রাজুর সঙ্গে পূর্ব পরিকল্পনা মতো দেখা করেন। সেখানে রাজুর সঙ্গেও এক ব্যক্তি ছিলেন। সেখানে হাফিজুরকে একটা থলে দেখানো হয়। তার মধ্যে ৩০০ টি মোহর ছিল। তাঁকে যে কোনও একটি বেছে নিতে বলেন রাজু। সেই মোহরটি নিয়ে কলকাতায় ফিরে স্বর্ণকারের কাছে যান হাফিজুর। স্বর্ণকার চাকতিটি খাঁটি সোনার বলে জানান হাফিজুরকে। নিশ্চিন্ত হয়ে ৩০০ টি মোহরের জন্য ৬ লাখ টাকা দাম দেবেন বলে রাজুকে জানান অভিযোগকারী। তাতে রাজু রাজি হয়ে গেলে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই দোকানে গিয়ে নগদ ৬ লাখ টাকা দিয়ে ৩০০টি মোহর কিনে আনেন হাফিজুর। তার পর সেই মোহর স্বর্ণকারকে দেখাতেই আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায় তাঁর। অভিযোগ, স্বর্ণকার তাঁকে জানান, সবক’টি চাকতিই তামার তৈরি। সোনার নাম গন্ধ নেই।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস আড়ি পেতেছিল বিধায়কদের ফোনে? সিবিআই তদন্ত দাবি বিজেপির
হাফিজুরের অভিযোগ, এর পর রাজুকে ফোন করতে গিয়ে দেখেন সেই ফোন সুইচড অফ। তার পর থেকে বেপাত্তা রাজু এবং তাঁর সঙ্গী। রাজুকে বিভিন্ন ভাবে খোঁজার চেষ্টা করে বিফল হয়ে শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা প্রতারকদের খোঁজ করছেন।
আরও পড়ুন: গালওয়ানে বর্তমান অবস্থান বজায় থাকলে কিন্তু ফায়দা চিনেরই
গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক বলেন,‘‘এ ধরনের গ্যাং রয়েছে যারা এ ভাবে পুরনো মুদ্রা, অ্যান্টিক বেচার নাম করে প্রতারণা করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গোটা লেনদেন বেআইনি হওয়ায়, প্রতারিত হওয়ার পরও অনেকে অভিযোগ জানাতে দ্বিধা করেন।” পুলিশের ধারণা সেই ধরনের কোনও গ্যাং এই কাজ করেছে।