ধর্মদাস জয়সওয়াল
ক্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির।
মঙ্গলবার চিৎপুর সেতুর উপরে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, ধর্মদাস জয়সওয়াল (৪৪) নামে এক ব্যক্তি একটি সাইকেল ভ্যানকে ঠেলে তুলছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে বেপরোয়া গতিতে একটি হাইড্রলিক ক্রেন ধর্মদাসকে ধাক্কা মারে। ধাক্কার চোটে রাস্তায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে যান তিনি। পরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ধর্মদাস বিহারের বাসিন্দা। কলকাতায় তিনি চিৎপুরেই থাকতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন দুপুর দুটো নাগাদ চিৎপুর সেতুর উপরে ওই সাইকেল ভ্যানটি পিছন থেকে ঠেলে তোলার চেষ্টা করছিলেন ধর্মদাস। সেই সময়ে পিছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা ওই হাইড্রলিক ক্রেনের সামনের অংশটা হেলে গিয়ে তাঁকে ধাক্কা মারে। ক্রেনের ধাক্কায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ধর্মদাস। সাইকেল ভ্যানের চালকের অবশ্য কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই পুলিশ জানায়।
অতীতেও শহরের রাস্তায় একাধিক বার ক্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। বছর দুয়েক আগে তারাতলার কাছে ক্রেন দুর্ঘটনায় দুই স্কুলপড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছিল। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনার পরে দিনের বেলায় শহরের রাস্তায় ক্রেন চলাচলের উপরে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছিল পুলিশ। কলকাতা পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে ক্যামেরার মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি চলাচলের উপরে নজর রাখা হয়। ঘটনার পরে তাই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, এ দিন কেন ওই ক্রেন পুলিশের নজর এড়িয়ে গেল! পুলিশ হাইড্রলিক ক্রেনের চালক রণধীর যাদবকে গ্রেফতার করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ক্রেনটিকেও। চালকের বিরুদ্ধে বেপরোয়া ভাবে যান চালানোর অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ট্র্যাফিকের এক কর্তা বলেন, ‘‘আগামী দিনে ভারী ক্রেন রাস্তায় যাতে না চলে তার জন্য নজরদারি চালানো হবে।’’
স্থানীয়েরা জানান, দুর্ঘটনার পরে ধর্মদাসের দেহ রাস্তার উপরেই খানিক ক্ষণ পড়ে ছিল। টালা সেতুর কারণে ইদানীং সংলগ্ন এলাকার নিত্যদিন যানজটে হাঁসফাঁস অবস্থা হচ্ছে। তার উপরে এ দিন চিৎপুর সেতুতে ওই দুর্ঘটনার জেরে সেখানে যানজট আরও বেড়ে যায়। ধর্মদাস চিৎপুরে তাঁর দাদা দেব জয়সওয়ালের কাছে থাকতেন। দেবের অভিযোগ, ‘‘এমন জনবহুল
রাস্তায় ক্রেন চালানোর সময়ে চালকের সাবধান হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু
চালক দ্রুত গতিতে চলতে গিয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটায়।’’