মানিকতলার এই ক্লাবের ঘরেই পাওয়া গিয়েছে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ। নিজস্ব চিত্র।
চোর সন্দেহে ফের পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়। বুধবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার মানিকতলা এলাকার মুচিপাড়ায়।
এ দিন দুপুরে স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে মানিকতলা থানার পুলিশ পৌঁছয় মুচিপাড়ার ১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবে।ওই ক্লাবের ভিতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তারা এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে।আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানে ওই ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তবে ওই ব্যক্তির পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এ দিন ভোরে ওই ব্যক্তিকে কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তোলা হয়। চোর সন্দেহে তাঁকে বাঁশ, লাঠি এবং উইকেট দিয়ে প্রচণ্ড মারা হয়। তার পর ওই ব্যক্তিকে ক্লাবের ভিতর আটকে রাখা হয়। বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় দরজা। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয় দুপুর বেলা। মানিকতলা থানার পুলিশ গিয়ে ক্লাবের দরজা খুলে দেখে, রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি নিথর অবস্থায় চেয়ারে বসে রয়েছেন। এর পরেই ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, বেশ কিছু ক্ষণ আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশকে জানিয়েছেন, গণপ্রহারের জেরে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশে খবর না দিয়ে কেন চোর সন্দেহে এ ভাবে পিটিয়ে মারা হল ওই ব্যক্তিকে তা এখনও তদন্তকারীদের কাছে স্পষ্ট নয়। তদন্তে নেমে মানিকতলা থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই স্থানীয় কয়েকজন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটক করা হয়েছে, ওই ক্লাবের তিনজনকে। ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন উপনগরপাল (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস। নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ কুকুরও। তাদের গতিবিধি দেখে ক্লাবের আশপাশের কয়েকটি বাড়িতেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
কয়েক মাস আগেগুজব এবং সন্দেহের কারণে রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্তে একাধিক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের তরফে কড়া পদক্ষেপও করা হয়েছিল সেই সময়। সেই আতঙ্কই কি ফের ফিরে এল? মানিকতলার ঘটনা ফের চিন্তায় ফেলেছে পুলিশ-প্রশাসনকে।
আরও পড়ুন: রবিবারে সাতসকালেই মিলতে পারে মেট্রো