মমতার ইচ্ছায় বাইপাস হবে ‘বিশ্ব বাংলা সরণি’

শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তা, বিমানবন্দর থেকে কলকাতা শহরে ঢোকার গুরুত্বপূর্ণ পথ ই এম বাইপাসের নামকরণ নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। রাস্তাটির একাংশ জ্যোতি বসুর নামে রাখার কথাও হয়েছিল একটা সময়ে। তবে কোনওটাই কার্যকর হয়নি। এ বার আর অংশবিশেষ নয়, দমদম বিমানবন্দর থেকে রাজারহাট-নিউ টাউন হয়ে গড়িয়া পর্যন্ত বাইপাসের পুরো রাস্তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের ব্র্যান্ডিং ‘বিশ্ব বাংলা সরণি’ নামে চিহ্নিত করার পথে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ কাজের মূল উদ্যোক্তা কলকাতা পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৪
Share:

শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তা, বিমানবন্দর থেকে কলকাতা শহরে ঢোকার গুরুত্বপূর্ণ পথ ই এম বাইপাসের নামকরণ নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। রাস্তাটির একাংশ জ্যোতি বসুর নামে রাখার কথাও হয়েছিল একটা সময়ে। তবে কোনওটাই কার্যকর হয়নি। এ বার আর অংশবিশেষ নয়, দমদম বিমানবন্দর থেকে রাজারহাট-নিউ টাউন হয়ে গড়িয়া পর্যন্ত বাইপাসের পুরো রাস্তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের ব্র্যান্ডিং ‘বিশ্ব বাংলা সরণি’ নামে চিহ্নিত করার পথে রাজ্য সরকার।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ কাজের মূল উদ্যোক্তা কলকাতা পুরসভা। বৃহস্পতিবার মেয়র পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত বিমানবন্দর থেকে গড়িয়া পর্যন্ত ওই পথের নাম ‘বিশ্ব বাংলা সরণি’ রাখতে রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলুক। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছেতেই ওই রাস্তার এমন নামকরণ হচ্ছে। তাঁর নির্দেশে পুরসভা ওই প্রস্তাব অনুমোদন করে রাজ্য সরকারকে পাঠাচ্ছে।” এর ফলে বাইপাসে ধাপার কাছের অংশ থেকে মুছে যাবে বিজ্ঞানী জে বি হ্যালডেনের নাম। যে এলাকায় রয়েছে একাধিক বড় হোটেল ও গুরুত্বপূর্ণ ভবন। বাইপাসের একটি অংশ সত্যজিৎ রায়ের নামাঙ্কিত করার কথাও ভাবা হয়েছিল। মেয়রের যুক্তি, “বড় রাস্তার জন্য কোনও কোনও রাস্তার নাম বাতিল করতে হবে। তা ছাড়া তো উপায়ও নেই।” কলকাতা পুরসভার নাম বদল কমিটিতে ওই প্রস্তাব পাশ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানিয়েছেন, এটা পুরসভার বিষয় নয়। তাই কমিটিতে পাঠানো হয়নি।

পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, বিমানবন্দর থেকে ওই রাস্তা রাজারহাট-গোপালপুর, নিউটাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ), বিধাননগর পুরসভা, কেএমডিএ এবং কলকাতা পুরসভার উপর দিয়ে গড়িয়ায় (ঢালাই ব্রিজ) মিশেছে। ওই দীর্ঘ পথই বিশ্ব বাংলা সরণি হিসেবে চিহ্নিত করতে চায় সরকার। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে এনকেডিএ-র সম্মতি মিলেছে বলে খবর। কলকাতা পুর-বোর্ড দু’একদিনের মধ্যেই ওই রাস্তার নামকরণের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, বামফ্রন্টের আমলে ইস্টানর্র্ মেট্রোপলিটন বাইপাসকে (ই এম বাইপাস) রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্মরণে জ্যোতি বসু অ্যাভিনিউ নামকরণ করার প্রস্তাব উঠলেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। এ দিন প্রাক্তন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের আশঙ্কা ছিল ওই নামকরণ হলে পরে তা বদলে দেওয়া হতে পারে, যা অসম্মানজনক। তাই আর এগোনো হয়নি।”

পুরসভা সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার বা অন্য কোনও পুরসভার আলাদা কোনও রাস্তা নামকরণ কমিটি নেই। যা আছে কলকাতা পুরসভার। যদিও পুরসভার হেরিটেজ ও রাস্তা নামকরণ কমিটি নিয়েও নানা অভিযোগ উঠেছে। পুরসভার এক অফিসার জানান, মূলত শহরের সংস্কৃতি ও কৃষ্টি সম্পর্কে ধারণা রয়েছে, এমন বিশিষ্ট জনদেরই ওই সব কমিটিতে রাখার নিয়ম। কিন্তু সম্প্রতি হেরিটেজ কমিটির কয়েক জন সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন তালিকায় ঢুকেছেন ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর কর্তা, মুখ্যমন্ত্রী মমতার একান্ত ঘনিষ্ঠ শ্রীকান্ত মোহতা। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পুরসভার অন্দরেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement