মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার নিকাশি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপের মুখে পড়লেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম থেকে রেল কর্তৃপক্ষ। বাদ গেলেন না মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাও। বিপুল অর্থ দেওয়ার পরেও কেন এখনও হাওড়ায় নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার হয়নি, সোমবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী পুরমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কেন পরিস্থিতির বদল হয়নি? পুরমন্ত্রী ফিরহাদ মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, একটি পরিকল্পনা করে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছিল। তিন বছর ধরে সেটি পড়ে রয়েছে। এমনকি, রেল কর্তৃপক্ষও তাদের এলাকায় পলি তোলার কাজ করছে না। ফলে, সমস্যা থেকে যাচ্ছে। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এর পরেই মুখ্যসচিকে নির্দেশ দেন, আজ, মঙ্গলবারই রেলের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান করতে হবে। এত দিন ধরে বৈঠক করে কী কাজ হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলতেও শোনা যায় তাঁকে।
প্রসঙ্গত, হাওড়া পুর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জল জমার সমস্যা থেকেই গিয়েছে। এমনিতে পুরনো শহর হাওড়ার নিকাশি ব্যবস্থাও সেকেলে। ফলে, সেটির সংস্কার করে স্থায়ী সমাধানের পরিকল্পনা অনেক দিন আগেই নিয়েছিল রাজ্য। যদিও সে কাজ এখনও এগোয়নি। তবে বিরোধীদের একাংশের প্রশ্ন, যে পরিকল্পনা এত দিন ধরে আটকে থাকার কথা বলা হচ্ছে, তা ছাড়াতে কি পর্যাপ্ত জোর রাজ্য সরকার বা সংশ্লিষ্ট দফতর দিয়েছিল?
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, “রেল অনেক আয় করছে। মানুষের পকেট কম কাটে না। ওদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। মেট্রোর কাজ যেখানে যেখানে হচ্ছে, সেখানে সিমেন্ট-বালির কারণে নিকাশির পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা চলবে না।”
অতীতে একাধিক সময়ে জল জমা বা ডেঙ্গি পরিস্থিতির কারণে রেল-সহ কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাগুলিকেও দায়িত্ব পালনের বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রশাসন যাতে সংশ্লিষ্ট এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা করে, সেই নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও সেই কাজ যে যথাযথ ভাবে হচ্ছে না, তা এ দিন পুরমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
এ প্রসঙ্গে রেলের এক কর্তা জানান, হাওড়ায় পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং মেট্রো রেলের পরিকাঠামো রয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হলে সমস্যা ঠিক কোথায়, তা স্পষ্ট হবে। রেলও সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে।
হাওড়া স্টেশন এবং টিকিয়াপাড়া ইয়ার্ডে জল জমলে রেল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়। বর্ষায় এই সমস্যা এড়াতে রেলের তরফে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানান পূর্ব রেলের অন্য এক কর্তা।