পুজোর আগে শেষ হবে না সেতু, ধারণা প্রশাসনের

সরকারি নির্দেশ ছিল, এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে নতুন সেতু তৈরির কাজ। সময় নষ্ট রুখতে সরকারি প্রক্রিয়া যথাসম্ভব সরল করে সেতু তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০২:৩১
Share:

মাঝেরহাটে কাজ চলছে নয়া সেতুর। ফাইল চিত্র

মাঝেরহাটে নতুন সেতু তৈরির কাজ শেষ করার জন্য রাজ্য সরকার আগামী সেপ্টেম্বরের সময়সীমা দিয়েছিল। নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের ধারণা, সেই সময়সীমা রক্ষা করা হয়তো সম্ভব হবে না। ফলে নতুন সেতু সাধারণের জন্য খুলে দিতে অতিরিক্ত অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। সিদ্ধান্ত এবং দায়িত্ব নিতে গড়িমসির কারণে সময়ে কাজ শেষ করা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন তাঁদের অনেকেই।

Advertisement

গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট সেতুর একাংশ। তার পরেই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পুরনো সেতু ভেঙে ফেলে সেই জায়গায় নতুন সেতু তৈরি করা হবে। সরকারি নির্দেশ ছিল, এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে নতুন সেতু তৈরির কাজ। সময় নষ্ট রুখতে সরকারি প্রক্রিয়া যথাসম্ভব সরল করে সেতু তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়। চটজলদি দরপত্রের প্রক্রিয়া সেরে সেতু তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি পেশাদার সংস্থাকে।

প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, জটিলতা শুরু হয় তখন থেকেই। নকশা তৈরি এবং তার অনুমোদন নিতে সময় নষ্ট হয় বেশ কিছুটা। এক কর্তার কথায়, ‘‘সেতু নতুন করে করতে হবে, এটা স্থির হয়ে গিয়েছিল। টেবিলের দু’প্রান্তে বসে পূর্ত দফতর এবং রেল কর্তৃপক্ষের আলোচনা চলেছে। কী পথে কাজ হবে, তা-ও স্থির হয়ে গিয়েছিল। তার পরেও কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ার যুক্তি নেই। বোঝা যাচ্ছে, কেউ দায়িত্ব নিতে চাননি। সম্ভবত সেটা ভয় থেকেই।’’

Advertisement

নকশা তৈরির পরেও রেলের সঙ্গে সমন্বয় নিয়ে সময় নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের দাবি, সেতুর পাশে যেখানে মেট্রো প্রকল্পের কাজ হচ্ছে, সেই এলাকার খানিকটা অংশ অবরুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা ছিল। আবার রেলের বক্তব্য ছিল, উপযুক্ত পরিসর না থাকলে মেট্রোর কাজ করা কঠিন। ফলে কী ভাবে কাজ করা হবে, তা নিয়ে টানাপড়েন চলতে থাকে।

শেষে নিজে বৈঠক করে বিকল্প উপায় বার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। এমনকি, কাজ সুষ্ঠু ভাবে চালাতে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের রূপরেখা তৈরি করতে মুখ্যসচিব পুলিশকে নির্দেশও দিয়েছিলেন।

প্রশাসনের শীর্ষ মহল জানাচ্ছে, মেট্রো এবং মাঝেরহাটে নতুন প্রকল্প সমান্তরাল ভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে সেতুর নকশায় কিছুটা পরিমার্জন করা হয়েছিল। সেতুর এক দিকে ফুটপাত রাখা হলেও অন্য দিকে রাখা হয়নি। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেলে স্তম্ভ গাঁথতে কত সময় লাগে! আধুনিক পদ্ধতি এবং প্রযুক্তিতে স্তম্ভ তৈরির পাশাপাশি অন্যত্র সেতুর উপরিভাগের অংশগুলি তৈরি হয় সমান্তরাল ভাবে। পরে তা জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এত বড় কাজের সিদ্ধান্তগুলিই সময় মতো চূড়ান্ত না হওয়ায় সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না বলেই মনে হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement