প্রতীকী ছবি।
মাদক চোরাচালান থেকে শুরু করে এলাকার বেকার যুবকদের কাজ দেওয়ার নামে বিপথে চালিত করা। তার বিরুদ্ধে এমন হাজারো অভিযোগ। একবালপুর, খিদিরপুর-সহ গোটা বন্দর এলাকা এবং দক্ষিণ শহরতলির একটা বড় অংশে সে ছিল মাদক পাচারের পাণ্ডা। বুধবার রাতে একবালপুর থেকে গাঁজা পাচারের সময়ে সেই চাঁইকে হাতেনাতে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের বন্দর বিভাগের বিশেষ তদন্তকারী দল (এসএসপিডি)।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুষ্কৃতীর নাম মহম্মদ মোর্সেলিন। বাড়ি একবালপুরের মোমিনপুর রোডে। কিন্তু কখনওই সে বছরখানেকের বেশি সময় এই শহরে থাকত না। বুধবার তদন্তকারীরা গোপন সূত্রে খবর পান, বাড়ি ফিরেছে ওই দুষ্কৃতী। এর পরেই বাড়ির কিছুটা দূরে মেহের আলি মণ্ডল রোড থেকে তাকে ধরা হয়। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ২ কেজি ১৯০ গ্রাম চরস এবং নগদ টাকা। বৃহস্পতিবার মোর্সেলিনকে আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
তদন্তকারীদের দাবি, গত বছর ডিসেম্বরে গার্ডেনরিচে মাদক পাচারের সময়ে তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের জেরা করেই মোর্সেলিনের নাম জানা যায়। ওই ঘটনার পর থেকেই বাড়ি ছাড়া ছিল সে। সম্প্রতি পুলিশের কাছে খবর আসে, মোর্সেলিন এলাকায় ঢুকেছে। সেই মতো ফাঁদ পাতেন গোয়েন্দারা।
লালবাজার সূত্রের খবর, মোর্সেলিন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। টাকার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় যুবকদের মাদক পাচারের কাজে লাগাত সে। নিজেই ট্রেনের টিকিট কেটে ওই যুবকদের নেপালে নিয়ে যেত। আগে থেকে হোটেল বুক করা থাকত কাঠমান্ডুতে। কলকাতা থেকে যাওয়া পাঁচ-ছ’জনের দলটিকে সেই হোটেলে রাখা হত। মোর্সেলিনই মাদক জোগাড় করে তা প্লাস্টিকের পাউচে ভরে সেলোটেপ দিয়ে আটকে দিত। তিন-চারটি ওই রকম পাউচ ভরা হত একটি ব্যাগে। প্রত্যেক পাচারকারীর কাছে ওই ব্যাগ তুলে দেওয়া হত। পরে রক্সৌলের কাছে রক্ষীবিহীন এলাকা দিয়ে সীমান্ত পার করে ভারতে পৌঁছত দুষ্কৃতীরা। তাদের সাহায্য করত মোর্সেলিনের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক জন।
তদন্তকারী এক অফিসার জানান, ভারতে ঢোকার পরে মাদক পাচারকারীরা ট্রেনে সাধারণ কামরায় কলকাতায় ফিরত। যাতে ভিড়ের মধ্যে কারও কোনও সন্দেহ না হয়। নেপাল থেকে ওই মাদক আনার পরে তা উত্তর-পূর্ব ভারতে পাচার করা হত মোর্সেলিনের নির্দেশেই।