Madhyamik

Madhyamik examination: পরীক্ষার পরে সন্তানের হাসি দেখে কাটল উদ্বেগ

প্রথম দিনের প্রথম পত্রের পরীক্ষা সবে শেষ হয়েছে। সোমবার বেলতলা গার্লস স্কুল থেকে মাস্ক পরেই বেরিয়ে আসছিল পরীক্ষার্থীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২২ ০৫:০৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

প্রথম দিনের প্রথম পত্রের পরীক্ষা সবে শেষ হয়েছে। সোমবার বেলতলা গার্লস স্কুল থেকে মাস্ক পরেই বেরিয়ে আসছিল পরীক্ষার্থীরা। বাইরে এসেই তারা খুলে ফেলল মাস্ক। অধিকাংশেরই মুখে হাসি। পরীক্ষা ভাল হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও যেন স্বস্তির শ্বাস পড়ল।

Advertisement

কোভিডের জেরে ২০২১ সালে মাধ্যমিক হয়নি। কিন্তু ২০২২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতেই স্কুলের বাইরে অভিভাবকদের অপেক্ষার চেনা ছবিটা ফিরে এল। তবে তাঁদের অনেকের মধ্যেই দেখা গেল দুশ্চিন্তার ছায়া। বেথুন স্কুলের সামনে দাঁড়ানো এক অভিভাবক বললেন, ‘‘করোনা আবহে মেয়ে যখন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন মাঝেমধ্যেই মনে হত, জীবন আগে না পরীক্ষা? দ্বিতীয় ঢেউ যখন মারাত্মক আকার নিয়েছে, চার দিক থেকে পরিচিত ও নিকটজনদের মৃত্যুর খবর আসছে, তখনও মনে হয়েছিল, ও আগে সুস্থ থাকুক। তার পরে পরীক্ষা।’’ স্কুল সংলগ্ন একটি পার্কে বসে ছিলেন আর এক অভিভাবক সুজিত চট্টোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাড়ির সকলের করোনা হয়েছিল। শুধু মেয়ের হয়নি। ওকে আলাদা ঘরে রেখেছিলাম। সেই সময়ে মনে হয়েছিল, পড়াশোনা থাক। আগে তো মেয়ের জীবন।’’

অভিভাবকদের আলাপচারিতায় উঠে এল এমনই নানা টুকরো টুকরো কথা। টাকি স্কুলের সামনে বসে থাকা কয়েক জন অভিভাবক জানালেন, করোনাকালে তাঁদের বেতনে কোপ পড়েছে। এ দিকে, ছেলেদের অনলাইন ক্লাসের জন্য মোবাইলের খরচ বেড়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে দিন কেটেছে আর্থিক কষ্টের মধ্যে দিয়েই। তবে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে‌ন। এক অভিভাবক জানালেন, তাঁদের পাড়ার কাউন্সিলর পরীক্ষার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এক অভিভাবক বললেন, ‘‘ছেলের তো আলাদা ফোন নেই। আমার ফোনেই অনলাইন ক্লাস করেছে। ছেলের কাছেই ফোন থাকত। এখন তো স্মার্টফোনেই মনোরঞ্জনের যাবতীয় উপাদান থাকে। এত দিন সে সবে বঞ্চিত ছিলাম। এখন ছেলে ভাল পরীক্ষা দিলেই সব আফশোস চলে যাবে।’’

Advertisement

সেন্ট মার্গারেটস স্কুলের সামনে পরীক্ষার আগে মেয়ে পায়েল মণ্ডলের কপালে দইয়ের ফোঁটা দিচ্ছিলেন মা রেখা মণ্ডল।
তার পরে মেয়ের মুখে গুঁজে দিলেন প্রসাদী মিষ্টি। রেখা বলেন, ‘‘অনলাইনে সারা বছর পড়াশোনা করল। কিন্তু পরীক্ষা অফলাইনে হচ্ছে। সেটাই একটু চিন্তার। তা ছাড়া, টানা তিন ঘণ্টা মাস্ক পরে থাকতে পারবে তো? এত ক্ষণ ধরে লেখার অভ্যাসটাও তো নেই। স্কুলটা একটু আগে খুললে বোধহয় ভাল হত।’’ পায়েলের কথায়, ‘‘অনলাইন ক্লাস তো অফলাইনের বিকল্প হতে পারে না। অফলাইনে ক্লাস হলে প্রস্তুতি আরও ভাল হত। টেস্ট পরীক্ষাও খুব তাড়াহুড়ো করে হয়েছে। মূল্যায়ন ঠিক মতো হয়নি। তাই একটু টেনশন হচ্ছে।’’

তবে পরীক্ষার শেষে বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীর মুখে হাসি দেখে অনেকটাই নিশ্চিন্ত অভিভাবকেরা। পিয়ালি রায় নামে এমনই এক জন বললেন, ‘‘মাধ্যমিক অফলাইনে হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ওরা করোনার মধ্যে বাড়িতে বসে প্রস্তুতি নিয়েছে। আশা করি, মূল্যায়নের সময়ে পরীক্ষকেরা নিশ্চয়ই বিষয়টি মাথায় রাখবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement