প্রস্তুতি: বাঁ দিকে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি মল, ডান দিকে কসবার একটি মলে হাত ধুচ্ছেন কর্মীরা। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
লকডাউনের কারণে দু’মাসেরও বেশি বন্ধ থাকার পরে সোমবার থেকে খুলছে শহরের সমস্ত শপিং মল। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে কী ভাবে শপিং মল চলবে, শুক্রবার থেকে বিভিন্ন মলে শুরু হয়েছে তারই প্রস্তুতি। জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে সব জায়গায়। তবে বেশির ভাগ শপিং মলের তরফে জানানো হয়েছে আগামী কিছু দিন দূরত্ব-বিধি বজায় রাখতেই শিশুদের নিয়ে সেখানে প্রবেশ করা যাবে না।
দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি শপিং মলে এ দিন দুপুরে দেখা গেল চলমান সিঁড়ি-সহ সর্বত্র জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। এক কর্তা দীপনারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘মাস্ক ছাড়া শপিং মলে ঢোকা যাবে না। ক্রেতার শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে। বড় লাগেজ নিয়ে শপিং মলে কেউ ঢুকতে পারবেন না। এমনকি লিফটের বোতামেও যেন হাত ছোঁয়াতে না হয় ক্রেতাদের, সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে শৌচালয়ের বেসিনগুলিকেও পাশাপাশি রাখা হচ্ছে না।’’ তিনি জানান, সাধারণ সময়ে শপিং মলে যত সংখ্যক মানুষ একবারে কেনাকেটা করতে পারতেন, এ বার সেই সংখ্যা কমবে।
ওই শপিং মলেরই একটি পোশাকের দোকানদার বলেন, ‘‘এখন থেকে আর আমাদের দোকানে পোশাক পরে দেখা যাবে না। ক্রেতারা পোশাক কিনে বাড়ি নিয়ে গিয়ে পরে যদি দেখেন গায়ে হচ্ছে না, তখন তিনি তা বদল করতে পারবেন। ফেরত আসা সেই জামাকাপড় আমরা ৪৮ ঘণ্টার জন্য ফেলে রাখব বা কোয়রান্টিনে রাখব। তার পরে ফের তা বিক্রি করা হবে।’’
আরও পড়ুন: বিধাননগরে নতুন করোনা রোগী ন’জন
কসবা এলাকার একটি শপিং মলে দেখা গেল সেখানেও চলছে জীবাণুমুক্ত করার কাজ। সেখানকার এক কর্তা কে বিজয়ন বলেন, ‘‘সরকারি সব বিধিনিষেধ মেনেই মল খুলছে। বাচ্চাদের আমরা আনতে বারণ করছি। আমাদের এখানে যে ফুড কোর্ট আছে, সেখানে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এক চতুর্থাংশ মানুষ একবারে বসে খেতে পারবেন। আমাদের মলে একবারে ২৫ হাজার মানুষ কেনাকেটা করতে পারেন। এ বার থেকে সাত হাজার মানুষ একসঙ্গে কেনাকেটা করতে পারবেন।’’ তিনি জানান, মাস্ক পরে তো আসতেই হবে, সেই সঙ্গে কোনও অসুস্থ ব্যক্তিও শপিং মলে ঢুকতে পারবেন না। শপিং মলে আসা গাড়িও স্যানিটাইজ় করার ব্যবস্থা রাখা হবে।
সল্টলেক এবং নিউ টাউনের দু’টি শপিং মলের কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের মলে পুরোদমে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। গাড়ি রাখার বেসমেন্টেও সেই কাজ চলছিল। লিফটে ওঠানামা করা যাত্রীর সংখ্যাও আগের থেকে অনেক কমানো হচ্ছে। নিউ টাউনের ওই শপিং মলের এক আধিকারিক বলরামকুমার সিংহ বলেন, ‘‘মলে বাচ্চাদের আনতে নিষেধ করছি। বড় ব্যাগ নিয়েও মলে প্রবেশ করা যাবে না।’’
অন্য দিকে শিয়ালদহের একটি শপিং মলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কিছু দোকান ইতিমধ্যে খুলে গিয়েছে। ওই শপিং মলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সরকারি সব বিধিনিষেধ মেনেই শপিং মলে কিছু দোকান খোলা হয়েছে। ওই দোকানগুলিও জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। তবে আমাদের ফুড কোর্ট বন্ধ রয়েছে।’’