চলছে মালপত্রের জীবাণুমুক্তিকরণ। —নিজস্ব চিত্র।
লকডাউনের জেরে অন্তর্দেশীয় যাত্রিবাহী উড়ান চলাচল বন্ধ ছিল প্রায় ৯ সপ্তাহ। গত ২২ মার্চের পর বৃহস্পতিবার ফের অন্তর্দেশীয় যাত্রিবাহী বিমান চলাচল শুরু হল কলকাতা এবং বাগডোগরা থেকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনেই এ দিন সকাল থেকে শুরু হয় বিমান পরিষেবা। বিমান বন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন ১১ জোড়া অন্তর্দেশীয় বিমান ওঠানামা করবে।
মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই, গুয়াহাটি-সহ দেশের বেশ কয়েকটি বড় শহরের উদ্দেশে এ দিন যাত্রিবাহী বিমান উড়ে যায় কলকাতা বন্দর থেকে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ দিন ১১টি বিমান কলকাতা থেকে উড়বে এবং ১১টি নামবে। এ দিন সকালে দিল্লি থেকে আসা প্রথম বিমানে কলকাতায় পৌঁছন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি যে বিমানে ছিলেন, এয়ার এশিয়ার সেই উড়ানে আসা এক যাত্রীর থার্মাল স্ক্রিনিংয়ে দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি পাওয়া যায়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই যাত্রীকে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা তাঁকে রাজারহাটের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যান শারীরিক পরীক্ষার জন্য।
কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মেনেই, বিমান বন্দরের লাউঞ্জে ঢোকার মুখেই বিমানবন্দর কর্মীরা সমস্ত যাত্রীদের মালপত্রে জীবাণুনাশক স্প্রে করেন। লাউঞ্জে ঢোকার মুখেই যাত্রীদের জন্য রাখা রয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। মালপত্র জীবাণুমুক্ত করার পর লাউঞ্জে ঢোকার মুখে যাত্রীদের থার্মাল গান দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার পর তাঁরা ভিতরে ঢুকছেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ রুখতে প্রথম দফায় বিমানবন্দরে কর্মী সংখ্যা কম রাখার কথা বলা হয়েছে। যাত্রীদের পরিচয়পত্র স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রে স্ক্যান করিয়ে সিআইএসএফ কিয়স্কে যেতে হচ্ছে। সেখানে কাচে ঢাকা কিয়স্কে থাকা কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা যাত্রীদের পরিচয়পত্র এবং টিকিট পরীক্ষা করে দেখছেন।
আরও পড়ুন: ‘লকডাউন এখনও চলছে নাকি? দেখে মনে হচ্ছে?’
সিকিউরিটি চেকিংয়ের সময় শারীরিক সংস্পর্শ এড়ানোর চেষ্টাও করছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। লাউঞ্জ এবং চেকড ইন জোনে বোর্ডিংয়ের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের বসার চেয়ারের ক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব বিধি কার্যকর করা হয়েছে। একটি অন্তর একটি চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিমানে দেওয়া হচ্ছে না চা-কফি বা কোনও খাবার। বন্ধ রাখা হয়েছে ম্যাগাজিন এবং খবরের কাগজের পরিষেবাও। নিজেদের সুরক্ষার জন্য বিমানসেবিকা এবং স্টুয়ার্ডরা পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্টস (পিপিই) পরে বিমানে যাত্রীদের পরিষেবা দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বাসের অপেক্ষায় লম্বা লাইন যাত্রীদের
রাজ্যে তিনটি বিমানবন্দর। কলকাতা ছাড়া বাগডোগরা থেকেও এ দিন বিমান পরিষেবা চালু হয়। এ দিন ৬টি বিমান সেখান থেকে ওঠা-নামা করবে। লকডাউনের সময় দিল্লি আটকে পড়েছিলেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। তিনিও এ দিন দিল্লি থেকে ফিরেছেন। এ দিন রাজ্য পরিবহণ নিগমের পক্ষ থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যাতে যাত্রীরা বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারেন এবং কলকাতায় নেমে গন্তব্যে যেতে পারেন। পাশাপাশি ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাবের ব্যবস্থাও ছিল।