অগ্নিযোগ: জ্বলছে সেই গুদাম। ভিড় করেছেন বাসিন্দারা। শুক্রবার, বেহালায়। নিজস্ব চিত্র
আবাসনে ঘেরা জনবহুল এলাকার মধ্যেই কাঠের গুদামে রমরমিয়ে চলত প্যাকিং বাক্সের কারবার। অভিযোগ, মানা হত না কোনও অগ্নিনির্বাপণ বিধি। দমকলের দাবি, ছিল না ফায়ার লাইসেন্সও। শুক্রবার রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গুদামটি ভস্মীভূত হওয়ার পরে বসতি এলাকায় এ রকম গুদাম তৈরির অনুমতি না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন বেহালার বামাচরণ রায় রোডের বাসিন্দাদের একাংশ।
যে গুদামে আগুন লেগেছিল, তার পাশের আবাসনেই থাকেন সাংসদ তথা নাট্যকার অর্পিতা ঘোষ। তিনি শনিবার বলেন, ‘‘এ ভাবে জনবহুল এলাকায় গুদাম চালানো যায় না। আমাদের আবাসনের বাসিন্দারা পুলিশের কাছে গুদাম তৈরির অনুমতি না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চিঠি দিচ্ছেন।’’ তিনি জানান, শুক্রবার রাতের অগ্নিকাণ্ডে তাঁর ফ্ল্যাটের সমস্ত জানলার কাচ ভেঙে পড়েছে। তিনটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও বিকল হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমনই হয় যে, আবাসন ছেড়ে রাতের অন্ধকারে রাস্তায় নেমে আসতে হয় ওই গুদাম লাগোয়া তিনটি আবাসনের বাসিন্দাদের। এলাকারই আর একটি আবাসনের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘জল নেই, বিদ্যুৎ নেই। এক দুর্বিষহ অবস্থা। পুলিশকে চিঠি দিয়ে জানাচ্ছি।’’
শুক্রবার রাত ন’টা নাগাদ আগুন লাগে বামাচরণ রায় রোডের ওই কাঠের গুদামে। প্যাকিং বাক্সের মতো দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন দ্রুত ছড়াতে থাকে। আশপাশের বিভিন্ন আবাসনেও ছড়িয়ে পড়ার পরিস্থিতি হয়। দমকলের ৭টি ইঞ্জিন গিয়ে মধ্য রাত পর্যন্ত লড়াই করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ দিন সকালে ফের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান দমকলের আধিকারিকেরা। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা গিয়েও গুদামের বিপজ্জনক অংশ ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেন। দমকলের অধিকর্তা সমীর চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই গুদামে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। প্রয়োজনে গুদাম মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোমবার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
গুদামের মালিকের সঙ্গে এ দিন বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে গুদামের কর্মীদের একাংশ বলছেন, আবাসনগুলি তৈরি হওয়ার আগে থেকেই গুদামটি রয়েছে। তবে গুদামে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না কেন? উত্তর নেই ওই কর্মীদের কাছে।