বামপন্থী বুদ্ধিজীবী তথা তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
সুস্থই ছিলেন। রোজকার মতো রবিবারও সকালে ঘুম থেকে উঠে বাজারে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে যায়। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। প্রয়াত হলেন বামপন্থী বুদ্ধিজীবী তথা তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়। রবিবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮।
শহরের সিঁথি এলাকার কালীচরণ ঘোষ লেনের বাসিন্দা ছিলেন অমল। পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার সকালে বাজারে গিয়েছিলেন অমল। ফেরার সময় বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে পড়ে যান তিনি। মাথা ফেটে যাওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাড়ির কাছের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভেন্টিলেশনেও রাখা হয়েছিল তাঁকে। তার পর বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ মৃত্যু হয় অমলের।
তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন অমল। পরে বিভাগীয় প্রধানও হন। ১৯৯১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন অমল। ওই পদে ছিলেন ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। অনেকে মনে করেন, প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পিছনের অমলের যথেষ্ট অবদান ছিল। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পবিত্র সরকার। তিনি বলেন, ‘‘অমলের মৃত্যুর খবরে আমি খুবই মর্মাহত। ওঁর সঙ্গে কখনওই একই প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর সুযোগ হয়নি। কিন্তু ওঁর সঙ্গে আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক চিন্তার মিল ছিল। অনেক জায়গায় দেখাও হত। ওঁর ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে শুনেছি, শিক্ষক হিসাবেও খুব ভাল ছিলেন অমল। গুণী ছিলেন। অমল নিজে বামপন্থী মনোভাবাপন্ন ছিলেন। বাম আমলে শাসকদলের অধ্যাপক সমিতিতে থেকে বেশ কিছু কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। সেই সময় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সত্যসাধন চক্রবর্তীই তাঁকে কলেজ প্রশাসনের কাজ নিজের মতো করেই চালানোর জন্য বলেছিলেন। তাঁর সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক ছিল।’’