আইন ভাঙছেন আইনজীবীরাই

ঘটনাস্থল হাইকোর্টের সামনে শহিদ ক্ষুদিরাম বসু রোড। পুরোটাই ‘নো হর্ন জোন’। কিন্তু পুলিশের সামনে দিয়েই হর্ন বাজিয়ে আদালতে ঢুকছে একের পর এক গাড়ি। আইন ভাঙা সত্ত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? কর্তব্যরত এক পুলিশ আধিকারিকের জবাব, ‘‘বেশিরভাগ গাড়িই তো আইনজীবীদের।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

জট: হাইকোর্টের সামনে রাস্তা জুড়ে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা জুড়ে লাইন দিয়ে গাড়ির সারি। কলকাতা হাইকোর্টের সামনে ওই সরু অংশ গলে একটি গাড়ি ঢুকতেই উল্টো দিক থেকে আর একটি গাড়ি চলে এসেছে। অবস্থা এমনই, কোনও গাড়িই বেরোতে পারছে না। বাধ্য হয়ে হর্ন বাজালেন একটি গাড়ির চালক। কিন্তু হাইকোর্টের সামনে তো হর্ন বাজানো বারণ! অন্তত কলকাতা পুলিশের তরফে লাগানো বোর্ড তা-ই বলছে। কিন্তু আইন থোড়াই কেয়ার। যাঁদের উপর দায়িত্ব জনসাধারণকে আইন মানানোর, তাঁরাই তা ভাঙছেন।

Advertisement

ঘটনাস্থল হাইকোর্টের সামনে শহিদ ক্ষুদিরাম বসু রোড। পুরোটাই ‘নো হর্ন জোন’। কিন্তু পুলিশের সামনে দিয়েই হর্ন বাজিয়ে আদালতে ঢুকছে একের পর এক গাড়ি। আইন ভাঙা সত্ত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? কর্তব্যরত এক পুলিশ আধিকারিকের জবাব, ‘‘বেশিরভাগ গাড়িই তো আইনজীবীদের। ওঁরা সচেতন না হলে আমরা কী করতে পারি?’’ ওই আধিকারিকের আরও সংযোজন, ‘‘ওঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাওয়াও অনেক ঝামেলার ব্যাপার।’’

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে ৩টে— দু’ঘণ্টা হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে দেখা গেল এমনই দৃশ্য। ওই চত্বরে পুলিশের তরফে অন্তত ১০টি ‘নো হর্ন জোন’ বোর্ড লাগানো।

Advertisement

আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘হাইকোর্টের আশপাশে পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় রাস্তায় গাড়ি রাখতে হয়েছে। হর্ন না বাজালে দুর্ঘটনা ঘটবে। চালকও নিরুপায়।’’ আইনজীবী ফাল্গুনী সরকার বলেন, ‘‘এখানে গাড়ি দাঁড় করানোর জন্য ভূগর্ভস্থ ব্যবস্থা হলে হর্ন বাজানোর প্রবণতা কমবে।’’ আর এক আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, ‘‘অনেক চালক অকারণে হর্ন বাজান। পুলিশকে কড়া হতে হবে।’’

ছবিটা একই হাইকোর্ট লাগোয়া এসপ্ল্যানেড রো ওয়েস্ট বা ওল্ড পোস্ট অফিস স্ট্রিটেও। ওই সব রাস্তাও ‘নো হর্ন জোন’। কিন্তু প্রতিটি রাস্তায় অর্ধেকের বেশি অংশ জুড়ে গাড়ি দাঁড় করানো। বাকি অংশ দিয়ে যাতায়াত করছে অন্য গাড়ি ও পথচারী। তারস্বরে বাজছে হর্ন। আইনভঙ্গকারী এক চালকের জবাব, ‘‘সামনেই গাড়ি, মানুষ। হর্ন না বাজালে যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তা হলে তো বিপদ বাড়বে।’’ ডিসি (ট্র্যাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘হাইকোর্টের সামনে হর্ন বাজালে পুলিশের তরফে একদম ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, তা নয়। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের তরফে গাড়ির নম্বর লিখে কেস দেওয়া হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement