প্রতীকী ছবি
সম্পন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা হাতানোর জন্য তিনি জনস্বার্থ মামলাকেই হাতিয়ার করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশের খবর, দু’-একটি নয়, এই ধরনের সাত শতাধিক জনস্বার্থ মামলা করেছেন তিনি, যার মধ্যে আছে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাও। ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের পরে গ্রেফতার হয়েছেন রাঁচী হাই কোর্টের সেই আইনজীবী।
পুলিশ জানায়, রাজীব কুমার নামে ওই আইনজীবীর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রবিবার রাতে কড়েয়া থানা এলাকার একটি শপিং মল থেকে টাকা নেওয়ার সময়ে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা এবং হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ তাঁকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, জোর করে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় করেছিলেন রাজীব।
পুলিশের অভিযোগ, রাজীব বিভিন্ন ব্যবসায়ীর নামে অন্যকে দিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করাতেন। পরে সেই সব মামলা থেকে ব্যবসায়ীদের অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে রফা করে টাকা আদায় করতেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সমঝোতা না-করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বাড়ি ও অফিসে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে তল্লাশি করানো হবে বলে হুমকিও দিতেন রাজীব। ভয়ে টাকা দিয়ে দিতেন অনেক ব্যবসায়ী।
বিচার ভবনের মুখ্য সরকারি আইনজীবী দীপঙ্কর কুণ্ডু সোমবার জানান, ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আদালতে তোলা হলে তাঁকে ৬ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
গত বছর কলকাতার এক চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীর সংস্থার নামে রাঁচী হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। রবিবার যে-ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা তুলতে গিয়ে রাজীব ধরা পড়ে যান, তিনিও সেই মামলায় পার্টি হয়েছিলেন। তার পরেই রাজীব মামলা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে কলকাতায় এসে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ১০ কোটি টাকা দাবি করেন। এবং টাকা না-পেলে যথারীতি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি, অফিস, গুদাম, দোকানঘরে তল্লাশি চালানোর হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, দরাদরিতে ১০ কোটি থেকে কমে টাকার অঙ্ক হয় চার এবং পরে ব্যবসায়ীর সঙ্গে সমঝোতা হয় এক কোটি টাকায়। ব্যবসায়ী পুলিশের দ্বারস্থ হন। নগদ টাকা নিতে রাজীব রবিবার রাঁচী থেকে উড়ানে কলকাতায় আসেন। ব্যবসায়ীর সঙ্গে সাদা পোশাকে পুলিশও যায় শপিং মলে। ব্যবসায়ীরা কাছ থেকে কিস্তির প্রথম ৫০ লক্ষ টাকা নিতেই রাজীবকে হাতেনাতে পাকড়াও করে পুলিশ।