তোড়জোড়: ছটপুজোর জন্য চিহ্নিত করা বিকল্প জলাশয়ে চলছে ঘাট তৈরির কাজ। আনন্দপুর। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
ছটপুজোর জন্য প্রশাসনের তরফে জোরকদমে চলছে কাজ। কোনও জলাশয়ে তৈরি হয়ে গিয়েছে জলে নামার বাঁধানো ঘাট। কোথাও বা চলছে কাঠের অস্থায়ী ঘাট তৈরির কাজ। বসানো হয়েছে বাতিস্তম্ভ। সেই সঙ্গে পুণ্যার্থীদের পোশাক বদলানোর জন্য কাপড়ের অস্থায়ী ঘেরাটোপ তৈরির কাজও চলছে পুরোদমে। কোনও কোনও জলাশয়ে অবশ্য কালীপুজোর বিসর্জন চলায় কাজ এখনও শুরুই করা যায়নি।
কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে বুধবার নোনাডাঙায় চারটি ঘাটের উদ্বোধন করেন মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে রবীন্দ্র সরোবরে ছট নিষিদ্ধ হওয়ায় শহরে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নতুন ১৬টি ঘাট তৈরি হচ্ছে। সেই ঘাটগুলিতে ছটপুজোর পরিকাঠামো তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।’’ সময়ের আগেই তা শেষ হবে বলে তাঁর দাবি। তবে প্রস্তুতি যেমনই হোক না কেন, প্রশ্ন উঠেছে, রবীন্দ্র সরোবরের প্রায় ২০ হাজার পুণ্যার্থীর জন্য বিকল্প জলাশয়ের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা কি যথেষ্ট? কারণ বেশ কিছু জলাশয় ঘেরা থাকায় সেখানে বেশি সংখ্যক ঘাট তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না।
দক্ষিণ শহরতলির লায়েলকা অঞ্চলের পুণ্যার্থীদের একাংশ ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, সেখানে জলাশয় বড় হলেও বেশির ভাগটাই ঘেরা। ফলে অস্থায়ী ঘাট তৈরি করা সম্ভব নয়। আপাতত ওই জলাশয়ে বিসর্জনের জন্য একটি ঘাট রয়েছে। এ ছাড়া, পুরনো একটি ঘাট পরিষ্কার করে সেখানে ছটপুজোর ব্যবস্থা করা হবে। ওই দু’টি ঘাট ছটের ভিড় সামলাতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সমস্যা এতটা প্রকট না হলেও যোধপুর পার্কের ঝিলপাড়ের একাংশে বসতি থাকায় পুরো জলাশয়টি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি, ওই জলাশয়ের একাংশ অপরিষ্কার বলেও পুণ্যার্থীদের অভিযোগ।
কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, এই ধরনের সমস্যার জন্যই লায়েলকার পাশাপাশি ওই এলাকার নব বৃন্দাবন পার্কের কাছে জোড়া জলাশয় নেওয়া হয়েছে। যোধপুর পার্কের কাছেই গল্ফ গার্ডেনে মাদারতলা এবং গোবিন্দন কুট্টি জলাশয়ে অনেক পুণ্যার্থী যেতে পারবেন। কেএমডিএ-র পাশাপাশি এ বার কলকাতা পুরসভাও তাদের বেশ কয়েকটি জলাশয়ে ছটপুজোর আয়োজন করছে।
কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘এক জায়গায় যাতে চাপ না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বরোয় পুর কর্তৃপক্ষ আলাদা ভাবে ছটপুজোর ব্যবস্থা করছেন।’’
রবীন্দ্র সরোবর সংলগ্ন এলাকার বেশির ভাগটাই কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর অন্তর্ভুক্ত। স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমার এলাকায় রানিকুঠি জলাশয়েও আলাদা করে পুরসভা ছটের জন্য ব্যবস্থা করছে।’’ তিনি জানান, ওই জলাশয়ে বিসর্জন হয়। তাই আজ, বুধবারের পর থেকে ওই জলাশয়ে কয়েকটি অস্থায়ী ঘাট তৈরি ছাড়াও পুণ্যার্থীদের জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হবে। কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘আমার বরোতেও তিনটি জলাশয়ে পুরসভা আলাদা করে ছটপুজোর ব্যবস্থা করেছে।’’