ফাইল চিত্র।
কলকাতা শহরে গত কয়েক দিনে একের পর এক দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যের ঘটনা ঘটেছে। হাঙ্গামার পাশাপাশি গুলিও চলেছে। এই পরিস্থিতিতে আমজনতার মনে প্রশ্ন উঠেছে, লালবাজার কি তবে গুন্ডা দমন করতে পারছে না? কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল অবশ্য বাহিনীর ‘ব্যর্থতা’ মানতে নারাজ। বৃহস্পতিবার পার্ক সার্কাসে ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীদের ছাতা, ওআরএস বিলির অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, ‘‘সব ক’টি ঘটনাতেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এমন কোনও ঘটনা নেই, যেখানে দুষ্কৃতীরা ছাড় পেয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘কলকাতা পুলিশ নাগরিকদের জন্য কাজ করে। শহরে কোনও রকমের গুন্ডামি সহ্য করা হবে না।’’
তবে পুলিশ কমিশনারের এই বক্তব্যের পরেও প্রশ্ন রয়ে যায়। অনেকেই বলছেন, গোলমাল হওয়ার পরে পুলিশ ধরপাকড় করছে ঠিকই। কিন্তু অপরাধ ঠেকানোর জন্য কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে কি? শহরে কী ভাবে এত বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মিলছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে মানুষের। তবে পুলিশ কমিশনারের জবাব, ‘‘আমরা সারা বছর ধরেই বেআইনি অস্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই। তা সত্ত্বেও দু’-একটি ঘটনায় গুলি চলেছে। সেখানেও তড়িঘড়ি অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’
পুলিশ কমিশনার বাহিনীর এই ‘তৎপরতা’র কথা বললেও শহরের বেশ কিছু এলাকায় পুলিশি নিয়ন্ত্রণ কতটা রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বাহিনীর অন্দরেই। খোদ পুলিশের একাংশেরই বক্তব্য, দক্ষিণ শহরতলির বাঁশদ্রোণী, রিজেন্ট পার্ক, হরিদেবপুর এবং পূর্ব কলকাতার আনন্দপুর, কসবার মতো কিছু এলাকা উর্দিধারীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। ওই সমস্ত এলাকায় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্তের কথা শোনা গেলেও পুলিশকে সে ভাবে কঠোর পদক্ষেপ করতে দেখা যায় না। প্রশ্ন উঠেছে, প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকার ফলেই কি দুষ্কৃতীরা আইনের ফাঁস থেকে বেঁচে যাচ্ছে?
এ প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও উত্তর না-দিলেও পুলিশের একাংশের ব্যাখ্যা, গোলমালের পরে হয়তো কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, অস্ত্রও বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। কিন্তু তারা কাদের মদতে এত সাহস পাচ্ছে এবং এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তার হদিস করা হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, বাঁশদ্রোণীতে দুই প্রোমোটারের দ্বন্দ্বেও এক প্রভাবশালীর নাম জড়িয়েছে। কিন্তু তাঁকে কোনও রকম জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনও জবাব মেলেনি।