ফাইল চিত্র।
২ মে ভোটগণনার দিন থেকে ৬ মে পর্যন্ত শহরের কোথায়, কতগুলি রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ জমা পড়েছে? সেই অভিযোগগুলির প্রেক্ষিতে পুলিশ কী কী পদক্ষেপ করেছে? কত জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে? এই সব প্রশ্নের উত্তর থানাগুলির কাছে জানতে চাইল লালবাজার। একই সঙ্গে ভোটের ফল ঘোষণার পরে কোনও রাজনৈতিক দলের বিজয় মিছিল বেরিয়েছিল কি না এবং তা বেরিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে পুলিশ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা-ও সব থানার কাছে জানতে চেয়েছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবারের মধ্যে ওই সব প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণের তালিকা রিপোর্ট আকারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। যার ভিত্তিতে থানাগুলি গত দু’দিন ধরে নিজের নিজের এলাকায় ভোটগণনার দিন থেকে ৬ মে পর্যন্ত রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা বা বিজয় মিছিলের হিসেব এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট লালবাজারে পাঠিয়েও দিয়েছে।
সূত্রের দাবি, মনে করা হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্ট ভোটের ফল পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে যে কড়া অবস্থান নিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই কলকাতা পুলিশ এলাকার ওই রিপোর্ট তৈরি করছে লালবাজার। যা আজ, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে জমা দেওয়া হতে পারে বলে খবর। কারণ, আজই ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পাঁচ সদস্যের বিশেষ বেঞ্চের শুনানি রয়েছে। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্য জুড়ে পর পর রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেই চলেছে। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। বহু লোক ঘরছাড়া এখনও। বিরোধীদের সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে বলে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন এক আইনজীবী।
তবে রাজ্যে যে হারে হিংসা ছড়িয়েছে, কলকাতায় সেই ভাবে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ সামনে আসেনি। কসবা, হরিদেবপুর, পাটুলি, আনন্দপুর, পঞ্চসায়রের মতো এলাকায় তাদের দলীয় সমর্থকদের মারধর করে বাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ দায়ের করেছিল বিজেপি।
পুলিশের দাবি, শহরে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। সব জায়গায় পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভোটের ফল ঘোষণার আগেই লালবাজার সব থানাকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে যে কোনও সংঘর্ষ ঠেকাতে অতিরিক্ত বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছিল।
পাশাপাশি লালবাজার এ-ও জানিয়েছে, করোনা অতিমারির জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ ছিল, ভোটের ফল প্রকাশের পরে কোনও রাজনৈতিক দল বিজয় মিছিল বার করতে পারবে না। তা সত্ত্বেও বেশ কিছু জায়গা থেকে ওই মিছিল বেরোয়। সে সব নজরে এসেছে পুলিশের। যার পরিপ্রেক্ষিতে সরশুনা-সহ বিভিন্ন থানা বিজয় মিছিল বার করার জন্য নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে।