মাদক-বিরোধী প্রচারে অস্ত্র সেম সাইড গোল

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের করা একটি টুইটে দেখা গিয়েছে, এক জন ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল নিজেদেরই গোলে ঢুকছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

টুইটারে কলকাতা পুলিশের সেই বার্তা।

মাদক-বিরোধী প্রচারেও এ বার ফুটবলকে হাতিয়ার করছে কলকাতা পুলিশ।

Advertisement

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের করা একটি টুইটে দেখা গিয়েছে, এক জন ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল নিজেদেরই গোলে ঢুকছে। পাশের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি নিজের পেটে সিরিঞ্জের মাধ্যমে শরীরে মাদক ঢোকাচ্ছেন। ছবির উপরে লেখা, ‘সেম সাইড’ গোল ভুলেও নয়।

পুলিশকর্তাদের ব্যাখ্যা, এই নেশা আসলে নিজের মৃত্যুকেই ডেকে আনা। কারণ এ ধরনের ইঞ্জেকশন থেকে শুধু মাদক রসই শরীরে চালান হয় না, ছড়িয়ে পড়তে পারে এডসের মতো মারণরোগও। প্রতি বছরই নানান আকর্ষণীয় উপায়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে সমাজ সচেতনতার প্রচার চালায় কলকাতা পুলিশ। বিশ্বকাপের মরসুমে এ বার প্রচারকে আরও আকর্ষণীয় করতে তাই বেছে নেওয়া হয়েছে ফুটবলকে। দিন কয়েক আগে ট্র্যাফিক সচেতনতায় মেসির পেনাল্টি মিসকে ব্যবহার করে টুইট করেছিলেন পুলিশ কমিশনার।

Advertisement

নতুন টুইটে কলম্বিয়ার প্রয়াত ডিফেন্ডার আন্দ্রে এস্কোবারের বিখ্যাত সেম সাইড গোলের ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে আমেরিকার বিরুদ্ধে এস্কোবারের সেম সাইড গোলে হেরে গিয়েছিল কলম্বিয়া। দেশে ফেরার পরে আততায়ীর গুলিতে মারা যান এস্কোবার। বলা হয়, সেম সাইড গোলের মাসুল নিজের প্রাণ দিয়ে চোকাতে হয়েছিল এস্কোবারকে। এ ভাবেই মাদকের সঙ্গে তুলনা টানা হয়েছে সেম সাইড গোলের।

ফুটবলকে হাতিয়ার করে মাদক বিরোধী এই প্রচার কম বয়সিদের সচেতন করতে বাড়তি ভূমিকা নেবে বলেই মত মনোরোগ চিকিৎসকদের একাংশের। এ প্রসঙ্গে মনোরোগ চিকিৎসক সঞ্জয় গর্গ জানান, কম বয়সি বিশেষত স্কুল পড়ুয়াদের সরাসরি মাদকের মতো বিষয় নিয়ে বোঝানো কঠিন। অনেক সময়ে এই আসক্তির ঝুঁকিগুলো তাদের সামনে তুলে ধরলেও তারা সবটা বুঝতে পারে না। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা রয়েছে সকলেরই। বাঙালির ফুটবল প্রেম এমনিতেই বেশি। তাই এমন বিষয়ের সাহায্যে মাদকাসক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রচার চালালে সচেতনতা প্রসারের কাজ কিছুটা সহজ হবে।’’

নেশামুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা বিদিশা ঘোষ বিশ্বাস কলকাতা পুলিশের এই প্রচারকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তিনি জানান, পড়ুয়াদের খেলাধুলোয় যোগদানে আরও আগ্রহী করে তুলতে কলকাতা পুলিশ উদ্যোগী হলে মাদক বিরোধী প্রচারও জোরদার হবে। তাঁর মতে, ‘‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্কুল পড়ুয়ারা সামান্য বিষয়ে অবসাদে ভোগে। স্কুল ও পড়ার বাইরে তারা অবসর কাটায় নেট দুনিয়ায়। কিন্তু খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকলে হার-জিত সহজে নিতে শিখবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement