আরব সাগরের তীরে রুপোলি পর্দার জগতে জনপ্রিয় সুরকারদ্বয়ের অন্যতম লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের শেষোক্তজন এক বার বলেছিলেন— তুম গগন কি চন্দ্রমা হো। এই যে গান, কী গানই না গেয়েছিলেন। কী অসাধারণ পারফেকশন। সম্ভবত এ কথা মাথায় রেখেই আশা ভোঁসলে বলেছিলেন ‘‘কী দরকার ছিল অত গান গাওয়ার। মাত্র আড়াইশোটা গান গাইলেই গোটা জীবন কেটে যেত।’’ বাংলা বেসিক গানের রেকর্ডে ‘হায়, হায় গো রাত যায় গো’ এবং ‘কত দূরে আর নিয়ে যাবে বলো’ এই গান দু’টি দিয়ে মান্না দে-র বঙ্গবিজয় শুরু। তার পর যে তিনি বহু দূরে চলে গিয়েছিলেন আজ তা সঙ্গীতের মহাফেজখানার স্মৃতি। তত দিনে তিনি মুম্বইয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত। ভৈরবীতে নিবদ্ধ ‘লগা চুনরি মে দাগ’ অথবা ‘আলবেলি নার প্রীতম দ্বারে’, কিংবা দরবারি কানাড়ায় ‘ঝনক ঝনক তেরি বাজে পায়েলিয়া’ কিংবা ইমন-এর উপর ‘বেহাগ যদি না হয় রাজি’ বা ‘সুন্দরী গো দোহাই দোহাই’— এমন সঙ্গীতভ্রমণ তাঁর সঙ্গেই সম্ভব। ‘বড়দের জোকস’ শুনতে নাকি খুবই পছন্দ করতেন, বিশেষ করে সলিল চৌধুরীর মুখে। ‘মর্জিনা-আবদাল্লা’ ছবির ‘বাজে গো বীণা’র রেকর্ডিংয়ের আগে ‘মুড’ আনার জন্য সুরকার তাঁর গায়ককে স্টুডিয়োর এক কোণে নিয়ে গিয়ে ‘জোকস’ বলে এমন মুড এনে দিয়েছিলেন, আজ তা ইতিহাস। আশির দশকে দূরদর্শনে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘গায়ে মাটি মেখে কুস্তি করতাম, তার পর হেদোর জলে সাঁতার। এখনও কোনও ইয়ংম্যানকে একটা পাঞ্চ করলে সে মোটামুটি টের পাবে।’’ সে বছর এইচএমভি থেকে পুজোয় রেকর্ড বেরোবে। চারটে গান, দুটো পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, দুটো গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা। রেকর্ডিংয়ের দিন মান্না দে স্টুডিয়োয় বসে আছেন তো বসেই আছেন। সুরকার নচিকেতা ঘোষের দেখা নেই। দু’ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর যখন তিনি রেগেমেগে বেরিয়ে যাবেন ঠিক সে সময় সুরকারের আবির্ভাব। ওই দিনই ‘আমার ভালবাসার রাজপ্রাসাদে’, ‘ওগো বর্ষা তুমি ঝোরো না গো’, ‘যদি পাথরে লেখো নাম’-এর মতো গান রেকর্ডিং হয়েছিল। এক বার এক অনুষ্ঠানে ছবি বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা মান্না দে-র, গম্ভীর গলায় ‘বিশ্বম্ভর রায়’ তাঁকে বললেন ‘‘তোমার কাকা কৃষ্ণচন্দ্র আমার বন্ধু, আর তুমি কিনা ‘এই দুনিয়ায় ভাই সবই হয়’ বলে মাতালের গানে আমাকে লিপ দেওয়ালে!’’ পর ক্ষণে হো হো হাসি ও স্নেহের আলিঙ্গন। একশো বছর পেরিয়েও আজও তিনি প্রতি দিন প্রায় প্রতিটি এফএম চ্যানেলে উপস্থিত। এর চেয়ে বড় সমকালীনতা আর কী-ই বা হতে পারে!
তিব্বত তখন অগম্য বললেই হয়। দার্জিলিঙে য়ুগেন গিয়াতসো-র কাছে তিব্বতি শিখে তাঁরই সহায়তায় ১৮৭৯-এ তিব্বত গেলেন শরৎচন্দ্র দাস (১৮৪৯-১৯১৭)। সেখানে ছিলেন ছ’মাস। আবার ১৮৮২ সালে গিয়ে ১৪ মাস ছিলেন। সে দেশ সম্পর্কে বহু তথ্য সংগ্রহ করে লেখেন দু’টি ভ্রমণ-বিবরণ। এনেছিলেন অজস্র প্রাচীন সংস্কৃত পুঁথি ও তার সংস্কৃত অনুবাদ, তার মধ্যে কাশ্মীরের মহাকবি ক্ষেমেন্দ্রের ‘বোধিসত্ত্বাবদানকল্পলতা’ তিনিই সম্পাদনা করেন। প্রণয়ন করেন তিব্বতি-ইংরেজি অভিধান ও তিব্বতি ব্যাকরণ। কলকাতায় গড়ে তোলেন ‘বুদ্ধিস্ট টেক্সট সোসাইটি’। তিব্বতি লামারা তাঁকে উপাধি দেন ‘খেন ছেন’ বা মহামহোপাধ্যায়। বৌদ্ধসংস্কৃতি ও তিব্বত বিদ্যা চর্চার পথিকৃৎ শরৎচন্দ্র দাসের ১৭০তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে অত্তদীপের আয়োজনে স্মরণসভা, ১৮ জুলাই সন্ধে সাড়ে ৫টায় কলেজ স্কোয়ারে বেঙ্গল থিয়জ়ফিক্যাল সোসাইটি হলে।
পটনা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন ১৯২৭-এ। ভাগলপুরে চল্লিশ বছর প্যাথলজিস্ট হিসেবে কাজ করে কলকাতায় থিতু হন ১৯৬৮ সালে। সাহিত্যচর্চা শুরু হয়েছিল ছোটবেলাতেই, ‘প্রবাসী’ ও ‘ভারতী’তে কবিতা ছাপা হয় ‘বনফুল’ ছদ্মনামে। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের (১৮৯৯-১৯৭৯) সাহিত্যসৃজনে তাঁর জীবিকা ও প্রবাস-জীবনের ভূমিকা বড় কম নয়। গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা— সব দিকেই তাঁর দক্ষতা ছিল। রবীন্দ্র পুরস্কার, জগত্তারিণী পদক-সহ নানা সম্মান পেয়েছেন। ১৯ জুলাই তাঁর ১২০তম জন্মদিন উপলক্ষে নন্দন ৩-এ, বিকেল ৫টায় আলোচনায় প্রচেত গুপ্ত ও নলিনী বেরা, পাঠে চন্দন সেন। দেখা যাবে বনফুলের গল্প নিয়ে চিত্ত বসু পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘একটি রাত’। সঙ্গের ছবিটি পরিমল গোস্বামীর তোলা।
স্মরণসভা
বাংলা বিদ্যাচর্চার অন্যতম পথিকৃৎ প্রয়াত অলোক রায়ের পরিচয় আর মান্যতা সুপণ্ডিত ও গবেষক অধ্যাপক হিসেবে। নানা রকমের পদপ্রতিষ্ঠা থেকে সম্পূর্ণ দূরবর্তী এই অধ্যাপক সম্পর্কে শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন ‘‘বাংলার এই দুঃস্থ সমাজ যেমন অধ্যাপককে নিয়ে সত্যিকারের গৌরব বোধ করতে পারে।’’ কেবলমাত্র সুশিক্ষকই ছিলেন না, সদা ব্যাপৃত থাকতেন ছাত্রছাত্রীদের অধ্যয়ন-সহায়তায়। নিরলস চর্চায়, নিজস্ব পড়াশোনায় মগ্ন রাখতেন নিজেকে। বহুবিধ প্রবন্ধ আর গ্রন্থাদি তাঁর সেই বৈদগ্ধেরই সাক্ষ্য বহন করছে। আজ তাঁর জন্মদিন। কথায়-গানে তাঁকে স্মরণ ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে বাংলা আকাদেমি সভাঘরে সন্ধে ৬টায়। আয়োজনে অধ্যাপক অলোক রায় স্মরণ সমিতি।
শোলাশিল্প
বাংলার শোলাশিল্প আজ আরও অনেক লোকশিল্পের মতোই হারিয়ে যেতে বসেছে। শোলার পুতুল, শোলার অলঙ্করণ, প্রতিমার সাজ, এমনকি শোলার পটে প্রতিমা গড়ে পুজোও ছিল বঙ্গসংস্কৃতির অঙ্গ। আজও বাংলার বিভিন্ন জেলায় অন্তত হাজার সাতেক মানুষ শোলাশিল্পে যুক্ত আছেন। ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানির কনসুলেট জেনারেলের সহযোগিতায় বাংলানাটক ডটকম এ বার এই শিল্পের পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগী। শোলা থেকে কত বিচিত্র সৃজন সম্ভব, প্রাথমিক পর্যায়ে সেই ছবি তুলে ধরতে ১৭-১৯ জুলাই আইসিসিআর-এ আয়োজিত হয়েছে প্রদর্শনী ‘গ্রিন আইভরি’ (১১-৭টা)। থাকছে কর্মশালা, কথা বলা যাবে জনা ত্রিশ শোলাশিল্পীর সঙ্গেও। শেষ দিন বিকেল ৩টেয় আছে আলোচনা।
অভিনব
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে সিনেমায় নামা। মা অনুভা গঙ্গোপাধ্যায়ের তালিমে প্রায় সেই সময়েই পা রাখলেন সঙ্গীত জগতে। কিশোর গায়ক-নায়ক হিসেবে ‘হংসরাজ’ (১৯৭৬) ছবিতেই মাত করে দিলেন অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়। চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, মঞ্চ ও সঙ্গীত জগতে পাঁচ দশকেরও বেশি যুক্ত রয়েছেন। লেখার ঝোঁকও অল্প বয়েস থেকেই। অনেক মঞ্চসফল নাটক, গান, চিত্রনাট্য লিখেছেন। তারই ফাঁকে মনের খুশিতে কিছু কিছু গল্প লেখা। এ বার তেমনই পঁচিশটি টানটান গল্প নিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে অভিনব অরিন্দম (পত্রভারতী)। স্টারমার্ক ও পত্রভারতীর যৌথ উদ্যোগে, ১৬ জুলাই সন্ধে ৬টায়, স্টারমার্ক সাউথ সিটিতে। উদ্বোধনে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, থাকবেন সব্যসাচী চক্রবর্তী, খেয়ালী দস্তিদার।
গায়ত্রী সন্ধ্যা
কিশোরী রাধারাণী দত্ত কবিতার খাতা দেখতে দিয়েছেন নরেন্দ্র দেবকে। রাধারাণী কোচবিহারের মেয়ে, বালবিধবা। নরেন্দ্র কয়েকটি কবিতা কেটে সংশোধন করলেন, রাধারাণী ফুঁসে উঠলেন, ‘‘আপনি আমার খাতায় হাত দিলেন কেন?’’ পরে ১৯৩১ সালে এই নরেন্দ্র দেব আর রাধারাণী পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হবেন, অনেকের জানা। রাধারাণী অপরাজিতা নামে কবিতা লিখতেন, শরৎচন্দ্রের ‘শেষের পরিচয়’ উপন্যাস শেষ করেছিলেন, তাও অনেকের জানা। কিন্তু যে বালিকা রাধারাণী সঙ্গিনীদের বলতেন, ‘‘মেয়েমানুষ বলবি না। আগে মানুষ, তার পর মেয়ে’’, তিনি অনেকের অজানা। স্ত্রী-আচার নয়, হিন্দু বিয়ের বৈদিক মন্ত্রগুলি বাংলায় ‘মিলনের মন্ত্রমালা’ নামে প্রকাশ করেছিলেন রাধারাণী, আজ বিস্মৃত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবীবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে আজ বিকেল চারটেয় গাঁধী ভবনে প্রথম রাধারাণী দেবী স্মারক বক্তৃতা। ‘লিঙ্গচেতনার উন্মোচন’ বা ‘ইনঅগারেটিং জেন্ডার’ নিয়ে সেখানে বলবেন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। পুরুষশাসিত বাঙালি সমাজে রাধারাণীর জীবন ও সাহিত্য যে অনন্যতায় ভাস্বর, তাই প্রকাশ পাবে আজকের গায়ত্রী সন্ধ্যায়!
সুরঞ্জনার নাটক
সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত তাঁর লেখা ‘মিসেস উদ্গারিকা’ নাটকটি ‘একুশে সংসদ’-এর এক আলোচনাচক্রে (নতুন শতকের শুরুতে) পড়ার পর শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় মোহিত চট্টোপাধ্যায় বিভাস চক্রবর্তী তাঁদের আলোচনায় নাটকটির অভিনয়-সম্ভাবনার প্রসঙ্গও তোলেন। বছর কয়েক পর স্বপ্নসন্ধানী-র একটি কর্মশালায় এমআইটি-র অন্যতম শিক্ষক ও নাট্যকার অ্যালান ব্রডি নাটকটি শুনে সেটির উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা বলেন সুরঞ্জনাকে। এত দিনে নিজের একক অভিনয়ে সে-নাটক মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলা থিয়েটারের ‘মালঞ্চী কইন্যা’। পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন তরুণ নীলাদ্রি ভট্টাচার্যের হাতে। এই অসহনীয় সময়ে যে ভাবে মেয়েদের আত্মপরিচয় ভুলিয়ে দেওয়ার অবিরত চেষ্টা চার পাশে, তা-ই চিনিয়ে দেবে এ-নাটক, সায়েন্স ফিকশনের বাতাবরণে। ‘নির্বাক অভিনয় একাডেমী’র প্রযোজনায় প্রথম অভিনয় মিনার্ভা থিয়েটারে ১৯ জুলাই সন্ধে ৭টায়।
দ্বিশতবর্ষে
সমস্ত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম থেকে নিজেকে বিযুক্ত করে নিয়েছিলেন তিনি। অঙ্ক কষে দেখিয়ে দিয়েছিলেন শ্রমই ফসল ফলায়, প্রার্থনার মূল্য শূন্য। ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকার সম্পাদক অক্ষয়কুমার দত্তের (১৮২০-১৮৮৬) জীবনের মূলমন্ত্র ছিল ‘শিখিব ও শিখাইব’। তাঁর ছাত্রপাঠ্য ভূগোল, পদার্থবিদ্যা, চারুপাঠ তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, বাহ্যবস্তুর সহিত মানবপ্রকৃতির সম্বন্ধবিচার কিংবা ভারতবর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায় অক্ষয়-কীর্তি হিসেবে স্মরণীয়। উনিশ শতকে তাঁর তৈরি পরিভাষাগুলি বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার পথকে সুগম করেছিল। বালিতে নিজের বাসভবনে তৈরি করেছিলেন ভূতাত্ত্বিক সংগ্রহশালা, ‘শোভনোদ্যান’ নামে উদ্ভিদবিদ্যাচর্চা ক্ষেত্র। আজ তাঁর দ্বিশততম জন্মদিন। গত বছর থেকেই ‘অক্ষয় সপ্তাহ’ পালনে উদ্যোগী হয়েছে অহর্নিশ, বাণীপুর বেসিক, ক্র্যাকার এবং উত্তরপাড়া জীবনস্মৃতি। তাদেরই উদ্যোগে ১৯ জুলাই সন্ধে ছ’টায় কলেজ স্ট্রিটে বই-চিত্র সভাঘরে দ্বিশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান। বলবেন আশীষ লাহিড়ী ও মহুয়া ভট্টাচার্য। ২১ জুলাই বিকেল পাঁচটায় অশোকনগর জয়-জয়ন্তী অনুষ্ঠানগৃহে স্মরণ অনুষ্ঠানে বলবেন শঙ্কর ঘোষ এবং এক ঝাঁক ছাত্রছাত্রী। আয়োজক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মৃতিরক্ষা কমিটি, সহযোগিতায় ‘মানব জমিন’।
পঞ্চাশ বছর
শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে থাকবেন বলে শিল্পী গৌতম মিত্র সরকারি চাকরি ছেড়ে দেন। ১৯৬৮ থেকে তিনি আকাশবাণীর নিয়মিত শিল্পী এবং ১৯৭৮ থেকে দূরদর্শনের। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম সুশীল বসু থেকে বিধুভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কাছে, রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখা সন্তোষ সেনগুপ্ত, সুচিত্রা মিত্র, শৈলজারঞ্জন মজুমদার, দেবব্রত বিশ্বাস প্রমুখের কাছে। নানা ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন, ‘লালপাহাড়ী’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা। পেয়েছেন নানা সম্মান। তাঁর সঙ্গীতজীবনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ, ১৫ জুলাই সন্ধে ৬টায় রবীন্দ্রসদনে ‘ভাবনা’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে নাচ, গান, কথায় শিল্পীকে শুভেচ্ছা জানাবেন অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়, অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রাবণী সেন, লোপামুদ্রা মিত্র প্রমুখ। প্রকাশিত হবে শিল্পীর নতুন রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্কলন ‘তারে বলা যায়’।
প্রান্তিক
দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি যৌনকর্মী ও প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের জন্য দীর্ঘ দিন কাজ করছে। ইতিমধ্যে ছোটবড় ২৬৪ জনকে দুর্বার স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ২০১৪-য় নাগপুরে স্লাম সকার প্রতিযোগিতায় জয় ছাড়াও ইয়ামাহা কাপে রানার আপ, ডেনমার্কের দানা কাপে অংশগ্রহণ-সহ বহু স্বীকৃতি ওদের ঝুলিতে। ২০১৬ থেকে বারুইপুরে ২৫ জনের জন্য আবাসিক খেলা-পড়ার ব্যবস্থা হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সহায়তার হাত বাড়ালেই উজ্জ্বল হতে পারে ওদের ভবিষ্যৎ, সংস্থার তরফে জানালেন স্মরজিৎ জানা।
পাহাড়ের ছবি
লাদাখ হিমালয়ের ষোলো হাজার ফিট উচ্চতায় মেঘ এসে তাঁর দরজায় কড়া নাড়ে। তিনি স্ট্যানজ়িন দরজাই। তাঁর বাড়ি লে থেকে সত্তর কিলোমিটার দূরে গিয়া গ্রামে। যাযাবর মেষপালক পরিবারে তাঁর জন্ম। ছেলেবেলার অর্ধেক সময় কেটেছে ছাগল-চমরি গাই চরিয়ে। পড়াশোনা বিকল্প স্কুলে, যার অধিকর্তা সোনাম ওয়াংচুক-কে দেখে মুগ্ধ হয়ে রাজকুমার হিরানি তাঁর ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর নায়ক আমির খানের ফুনসুক ওয়াংডু চরিত্রটি তৈরি করেছিলেন। জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্ট্যানজ়িন-এর এই স্কুলেই সিনেমার জগতের সঙ্গে পরিচয় ও প্রেম। নিজের জীবন, সমাজ এবং পরিমণ্ডল সম্পর্কে কথা বলার মাধ্যম হিসেবে তিনি সিনেমাকে বেছে নিয়েছিলেন। যাত্রা শুরু ২০০০ সালে। ‘সন্ডু’ তাঁর প্রথম কাহিনিচিত্র। ২০০৬-এ শুরু করলেন নিজের সংস্থা ‘হিমালয়ান ফিল্মস’। তার পর ছড়িয়ে পড়া জাতীয়-আন্তর্জাতিক পরিসরে। ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় বেশ ক’টি ছবি তৈরি হয়, যার মধ্যে সব থেকে বেশি জনপ্রিয়তা ও স্বীকৃতি পেয়েছে ২০১৬-র তথ্যচিত্র ‘দ্য শেপার্ডেস অব দ্য গ্লেসিয়ারস’ (হিমবাহের মেষপালিকা)। স্ট্যানজ়িনের দিদি শেরিং এই তথ্যচিত্রের মূল চরিত্র, যিনি এখনও বছরের ছ’মাস পাহাড়ে পাহাড়ে হিমাঙ্কের ৩২ ডিগ্রি নীচে তাঁর ভেড়াদের চরাতে নিয়ে যান, যাদের সঙ্গে, যে পরিবেশের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক। নির্বাচন কমিশন মনোনীত জেলা যুব আইকন, স্ট্যানজ়িন সম্প্রতি প্রথম বার কলকাতা ঘুরে গেলেন। হিমালয়ের সন্তানের চোখে হিমালয়ের ছবি দেখানো হল এসআরএফটিআই, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে।