—প্রতীকী ছবি।
উঁচু-নিচু রাস্তায় কখনও বেপরোয়া গতির কারণে বাইক দুর্ঘটনা। কখনও বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু। কলকাতা পুলিশ এলাকায় এমন পথ দুর্ঘটনা এবং তাতে মৃত্যুর সংখ্যা নেহাত কম নয়। এই ধরনের দুর্ঘটনা কমাতে এ বার তার নেপথ্যে থাকা কারণগুলি চিহ্নিত করতে উদ্যোগী হল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। কলকাতা পুরসভাকে চিঠি দিয়ে ওই কারণগুলির সুরাহা করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে তাদের তরফে।
লালবাজার সূত্রের খবর, সপ্তাহ কয়েক আগে বৈঠকে বসেছিলেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা। শহরের রাস্তায় দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যা কী ভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে পুলিশকর্তারা শহরে পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। বেহাল উঁচু-নিচু রাস্তা, একাধিক বড় রাস্তার মাঝে ‘রেফিউজ আইল্যান্ড’ বা পথচারী দ্বীপ না থাকা, ব্যস্ত রাস্তার পাশে বিপজ্জনক পোস্টার বা বাতিস্তম্ভ থাকা-সহ একাধিক বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন পুলিশকর্তারা, যা
দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসাবে দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া, শহরের কয়েকটি রাস্তায় বিপজ্জনক ভাবে থাকা ট্রামলাইনও গাড়ি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তাই দুর্ঘটনা কমাতে দ্রুত সেগুলির সুরাহা করতে চায় কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ।
বৈঠকের শেষে কলকাতা পুরসভা-সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক বিভাগকে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে চিঠি পাঠানো হয়। সেই চিঠিতে রাস্তার নাম ধরে ধরে কোথাও পথচারী দ্বীপ তৈরির কথা বলা হয়েছে, কোথাও বিপজ্জনক ভাবে থাকা বাতিস্তম্ভ সরানোর কথা জানানো হয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, এ জে সি বসু রোড, মৌলালি মোড়, মল্লিকবাজার, ইলিয়ট রোড-সহ একাধিক রাস্তার নাম লেখা হয়েছে ওই চিঠিতে।
এ জে সি বসু রোডে একাধিক জায়গা চিহ্নিত করে দ্রুত ‘রেফিউজ আইল্যান্ড’ তৈরি করার কথাও বলা হয়েছে পুরসভাকে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাস্তায় একাধিক স্কুল রয়েছে। প্রতিদিন পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। ফলে সেখানে পথচারী দ্বীপ তৈরি করা দ্রুত প্রয়োজন।
যদিও পথ দুর্ঘটনা নিয়ে লালবাজারের এই উদ্বেগ নতুন নয়। এর আগে একাধিক বার কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল শহরে দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর সংখ্যা আরও কী ভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। জোর দেওয়া হয়েছে পথচারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতেও। তার পরেও দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু বন্ধ করা যায়নি। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘রাস্তা, গাড়ি, মানুষ থাকলে দুর্ঘটনা হবে। কোনও শহরই দুর্ঘটনা আটকাতে পারেনি। তবে আমরা গত কয়েক বছরের তুলনায় দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা কমাতে পেরেছি। আরও কী ভাবে কমানো যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
কলকাতা পুরসভার তরফেও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পুরসভার এক মেয়র পারিষদ বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা সমান করার কাজ করা হয়েছে। রাস্তা সারাইয়ের কাজও চলছে। পথচারী দ্বীপ-সহ বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।’’