যানজটে থমকে আছে গোটা ধর্মতলা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও যানজটের প্রভাবে বেশ কিছুক্ষণ থমকে গেল শহরের কেন্দ্রস্থল। সোমবার তৃণমূলের সভার জন্য সারা দিনই যানজটে নাকাল হয়েছেন শহরবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে ছিল কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিজেপি-র মিছিল। বিকেল হতেই শুরু হয় ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত সিপিএমের মিছিল। এই জোড়া কর্মসূচির দাপটে দুপুর ও সন্ধ্যার দিকে বেশ কিছুক্ষণ অবরুদ্ধে হয়ে পড়ে ধর্মতলা, লেনিন সরণি, জওহরলাল নেহরু রোড, এসপ্ল্যানেড ইস্ট, এস এন ব্যাানর্জি রোড, ওয়েলিংটন ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের একাংশ। অভিযোগ, দুপুরের চেয়েও সন্ধ্যার মিছিলে বেশি নাকাল হন মানুষ।
দুপুর ১.৪৫। ওয়েলিংটন থেকে কলেজ স্ট্রিটগামী রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে স্কুল ফেরত ছাত্র-ছাত্রীরা। কয়েকজন জানায়, যানজটের আশঙ্কায় বাসে না উঠে হাঁটতে শুরু করে তারা।
দুপুর ৩.১০। এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে ধর্মতলা পৌঁছল বিজেপির বিশিষ্ট জনদের মিছিল। তখন ওই রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইন। ধর্মতলামুখী এক বাসচালক জানালেন, মৌলালি মোড় থেকে ধর্মতলা মোড়ে আসতে প্রায় এক ঘণ্টা লেগেছে। এস এন ব্যনার্জি রোড অবরুদ্ধ হওয়ার প্রভাব পড়েছে সংযোগকারী রাস্তাগুলিতেও।
বিজেপি-র মিছিল শেষে রাস্তা কিছুটা স্বাভাবিক হতে না হতেই শুরু হয় দ্বিতীয় মিছিল। ফের অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শহরের কেন্দ্রস্থল। সন্ধ্যাবেলা লেনিন সরণি ধরে মিছিল যাওয়ায় যানজটে নাকাল হন ঘরমুখী মানুষ।
বিকেল ৫.৩০। লেনিন সরণি পর্যন্ত মিছিল এগোতেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ধর্মতলা চত্বর। যানচলাচল থমকে যায় লেনিন সরণি, জওহরলাল নেহেরু রোড, এসপ্ল্যানেড ইস্ট ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। লেনিন সরণি অবরুদ্ধ হওয়ায় শিয়ালদহ যাওয়ার বহু বাস আটকে যায়। ফলে ট্রেন ধরার তাড়ায় অনেককেই দেখা যায় ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত হেঁটে যেতে।
সন্ধ্যা ৬.১০। ওয়েলিংটন মোড়। হন্তদন্ত হয়ে প্রবীর রায় নামে এক ব্যক্তি রাস্তা পেরোচ্ছিলেন। জানালেন, হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে হবে। তিনি বলেন, “এক ঘণ্টা হাতে নিয়ে বেরিয়েও লাভ হল না। এখন দুই পা-ই ভরসা।”
ভোগান্তি তবু শেষ হল না। আজ, বুধবার এন আর এসের হস্টেলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কোরপান শা-র খুনের প্রতিবাদে রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর ‘আইন ভাঙো’ অভিযান হওয়ার কথা। ফের যানজটের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
তবে মঙ্গলবারের মিছিল সম্পর্কে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের একাংশের দাবি, একটি মিছিলেরও যাত্রাপথ বেশি দূর ছিল না বলে বেশি যানজট হয়নি।