মৌলালির কাছে ট্রাম লাইনে গাছ কাটার কাজ চলছে। সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ‘তিনের গেরো’য় নাস্তানাবুদ হতে হল শহরবসীকে। গতকাল সন্ধ্যার ঝড়-বৃষ্টি, বৃহস্পতিবার মৌলালিতে কলকাতা পুলিশের পথ নিরাপত্তার অনুষ্ঠান আর রাখি বন্ধন উৎসব, এই তিনের গেরোয় পড়ে শহরবাসীর কপালে চরম ভোগান্তি জুটল দিনভর। সকাল থেকেই তীব্র যানজটে কার্যত কলকাতার গতি এ দিন প্রায় স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
যানজট এতটাই যে, মানিকতলা থেকে কাঁকুড়গাছি— এই মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে লেগে যায় ৩০ মিনিটেরও অধিক সময়। রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বিবেকানন্দ রোড, লেক টাউন থেকে শ্যামবাজার যাওয়ার রাস্তা। ও দিকে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, পার্ক সার্কাস, গড়িয়াহাট, ঢাকুরিয়া, বেহালাতেও ছিল তীব্র যানজট। সকাল থেকেই যা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশদের। তবে দক্ষিণ কলকাতার যানজট অপেক্ষাকৃত কম ছিল বলেই লালবাজার সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: প্রলয় ঝড়ে লন্ডভন্ড শহর, মৃত ৩
ট্রাফিক সূত্রের খবর, একই দিনে তিনটি কারণ সম্মিলিত হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যার মূলে রয়েছে বুধবার সন্ধ্যার ঝড়বৃষ্টি। মিনিটে সাতেকের সেই ঝড়ে শহরজুড়ে একাধিক গাছ রাস্তার উপরেই ভেঙে পড়ে। রাত থেকে গাছ কেটে রাস্তা খোলার কাজ চললেও সব জায়গায় তা করে ওঠা সম্ভব হয়নি। এ দিন সকালে শহরের বিভিন্ন জায়গায় সেই গাছ কাটার কাজ আবার শুরু হয়। তা করতে গিয়ে বেশ কিছু রাস্তা আটকে রাখে পুলিশ।
রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে তখনও গাছ কাটা চলছে। যাদবপুরে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা যত বেড়েছে সেই চাপ আরও বেড়েছে। তার উপর এ দিন মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে কলকাতা পুলিশের পথ নিরাপত্তার একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। যার জন্য লেনিন সরণি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই রাস্তার সব গাড়িকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে ঘুরিয়ে বের করানো হয়। বাড়তি চাপ এসে পড়ে ওই রাস্তার উপরেও। তারপর এ দিন শহরের বিভিন্ন রাস্তায় রাখি বন্ধন উপলক্ষে ছোটখাটো শোভাযাত্রা বেরিয়েছে। শোভাযাত্রার বিষয়টি ছোট হলেও এ দিন তার প্রভাব পড়েছে অনেক। সব মিলিয়ে এ দিন বিকেল পর্যন্তও কলকাতার স্বাভাবিক গতি ফেরাতে পারেনি পুলিশ।
—নিজস্ব চিত্র।