—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাত দখলের কর্মসূচিতে রাস্তা আটকানোর জন্য আহ্বায়কদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে নোটিস পাঠানো শুরু করল কলকাতা পুলিশ।
সূত্রের খবর, বেহালার সখের বাজারে ডায়মন্ড হারবার রোডে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত দখলের কর্মসূচি নিয়েছিলেন একদল তরুণী। অভিযোগ, তাঁরা জাতীয় সড়ক আটকে যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়েছেন। ওই অভিযোগ তুলে কর্মসূচির পাঁচ আহ্বায়কের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও জাতীয় সড়ক আইনের ধারা অনুযায়ী পুলিশ মামলা রুজু করেছে। সেই সঙ্গে ওই পাঁচ জনকে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ৩৫(৩) ধারা অনুযায়ী আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্তকারীদের সামনে হাজির হওয়ার কথা বলে নোটিস জারি হয়েছে।
বাঁকুড়া জিলা সারদামণি মহিলা মহাবিদ্যাপীঠের ভূগোল বিভাগের দুই ছাত্রীকেও একই কারণে ক্লাস থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই কলেজে ভূগোলের বিভাগীয় প্রধান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা শ্যামল সাঁতরা। এই ঘটনার পরে শ্যামলের বিরুদ্ধে কলেজে ‘থ্রেট কালচার’ চালানোর অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন ছাত্রীদেরই একাংশ। শ্যামলের অবশ্য দাবি, “ওই দুই ছাত্রী একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে জুনিয়র ছাত্রীদের থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করছে ও নানা বিষয়ে প্ররোচনা দিচ্ছিল বলে আমার কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান কিছু ছাত্রী। তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে আর জি কর আন্দোলনের সম্পর্ক নেই।”
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রায় রোজই আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে কলকাতা। কোথাও রাত দখল হয়েছে তো কোথাও মানববন্ধন। নাগরিকদের ওই স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদ দেখেই শাসক ভয় পেয়ে মামলা রুজু করেছে বলে অভিযোগ। রাস্তা আটকে অনুষ্ঠান করার জন্য ঠাকুরপুকুর থানার তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছে রাত দখল কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা মেঘনা বড়ুয়াকে। শুক্রবার তিনি জানান, তাঁদের অনুষ্ঠান হয়েছিল রাস্তার এক পাশে, যেখানে পুলিশ গার্ড রেল দিয়ে আগেই ঘিরে রেখেছিল। পুলিশের নোটিস পাঠানো প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এর জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁরা ফের রাস্তায় নামবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ যে ধারায় মামলা রুজু করেছে, তার মধ্যে একটি জামিন অযোগ্য। পুলিশ জানিয়েছে, আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রায় দেড় মাস ধরে শহরে রাস্তা আটকে প্রতিবাদ, মিছিল, মিটিং চলছে। যার জেরে ব্যাপক যানজট হচ্ছে। মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ওই বেআইনি কাজের জন্যই ওই মামলা রুজু করা হয়েছে।
এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, শহরে রাস্তায় মিছিল-মিটিং বা অবস্থান করতে হলে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু প্রতিবাদের ক্ষেত্রে পুলিশকে একটি ই-মেল পাঠিয়ে রাস্তা দখল করে কর্মসূচি পালন করছেন কেউ কেউ। যার ফলে পুলিশ আগাম কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।