গ্রাফিক
রাতের রাজপথে প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ঊষসী সেনগুপ্তকে হেনস্থা হতে হয়েছিল বেপরোয়া মোটরবাইক আরোহীদের হাতে। ওই ঘটনার পরেই পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার নির্দেশে রাতের শহরে নিয়মিত ভাবে নাকা-তল্লাশি শুরু করেছিল পুলিশ। রাতের নির্দিষ্ট একটি সময়ে শহরের ২৫ থেকে ৩০টি জায়গায় ওই তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। লালবাজারের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রায় ছ’মাস একই ভাবে চলার পরে ওই নাকা-তল্লাশির পদ্ধতিতে এ বার বদল আনা হয়েছে। এখন আর শহরের সর্বত্র একই সময়ে নাকা-তল্লাশি হচ্ছে না। নতুন নতুন জায়গা বেছে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ওই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নাকা-তল্লাশি শুরুর কিছু ক্ষণ আগে তা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ট্র্যাফিক গার্ড এবং থানার পুলিশকর্মীদের। সেই মতো পুলিশকর্মীরা সেখানে পৌঁছে তল্লাশি চালিয়ে বেপরোয়া ও মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
লালবাজার এমন ‘সারপ্রাইজ়’ নাকা চালু করল কেন?
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, প্রায় ছ’মাস ধরে ওই নাকা-তল্লাশি চলছে শহর জুড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রাত ন’টার পর থেকে গার্ডরেল বসিয়ে রাস্তা আটকে ওই তল্লাশি করা হত। নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট জায়গায় লাগাতার ওই তল্লাশি চালানোর ফলে শহরবাসীদের একটি বড় অংশেরই বিষয়টি জানা হয়ে গিয়েছিল। ফলে ওই রাস্তা এড়িয়ে গেলে খুব সহজেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে যাতায়াত করা যেত। সেই সুযোগটাই নিচ্ছিলেন মোটরবাইক আরোহীদের একটি বড় অংশ।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, তাঁদের কাছে বিভিন্ন সূত্র মারফত ওই খবর পৌঁছেছিল। তাই ঠিক হয় ‘সারপ্রাইজ’ বা ‘জাম্পিং’ নাকা করা হবে। সেই মতো এখন দিন বা রাতের যে কোন সময়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ডিভিশন বেছে নিয়ে দুই বা তিন ঘণ্টা নাকা-তল্লাশি করা হচ্ছে।
লালবাজার জানিয়েছে, প্রতিটি ডিভিশনে পৃথক সময়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পুলিশকর্মীরা ওই নাকা-তল্লাশি করছেন। একটি ডিভিশন বা জায়গায় নাকা শেষ হওয়ার পরেই পাশের কোনও জায়গায় নাকা শুরু হচ্ছে। লালবাজারের তরফে নাকা শুরুর কিছু আগে কোথায় নাকা হবে, সেই জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে আইন অমান্যকারী বেপরোয়া গাড়িচালকেরা এক জায়গায় পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিলেও অন্যত্র ধরা পড়ে যাচ্ছেন।