ফরেন্সিকে স্বাবলম্বী হচ্ছে কলকাতা পুলিশ 

রাজ্য বা কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা আর নয়। ফরেন্সিক পরীক্ষা করতে এ বার স্বাবলম্বী হওয়ার পথে হাঁটছে কলকাতা পুলিশ!

Advertisement

শিবাজী দে সরকার ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০২:২৩
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্য বা কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা আর নয়। ফরেন্সিক পরীক্ষা করতে এ বার স্বাবলম্বী হওয়ার পথে হাঁটছে কলকাতা পুলিশ!

Advertisement

বর্তমানে রাজ্য ফরেন্সিক দফতরের অধীনে একটি ছোট মোবাইল ফরেন্সিক ইউনিট রয়েছে। কলকাতা পুলিশের এলাকায় কোনও দুর্ঘটনা বা বিপর্যয় ঘটলে সাধারণত তদন্ত বা নমুনা সংগ্রহের জন্য সেই ইউনিটের সদস্যেরা গিয়ে থাকেন। লালবাজার সূত্রের খবর, সেই ইউনিটকেই এ বার কলকাতা পুলিশের রিপন স্ট্রিটের দফতরে নিয়ে আসা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, রাজীব কুমার কলকাতার পুলিশ কমিশনার থাকাকালীনই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন।

এ নিয়ে রসিকতা করে টেলিভিশনের জনপ্রিয় হিন্দি ধারাবাহিক ‘সিআইডি’র প্রসঙ্গ টেনে আনছেন কেউ কেউ। ওই ধারাবাহিকে দেখানো হয়েছিল, ‘সিআইডি’ দফতরের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে একটি ফরেন্সিক ইউনিট। সেখানে কোনও ঘটনার তদন্তে নমুনা মিললে তা বিশ্লেষণ করে যত শীঘ্র সম্ভব তার রিপোর্ট সিআইডি-কে জানিয়ে দিতেন ডক্টর সালুঙ্কে। লালবাজারের গোয়েন্দা দলে এমন ‘ডক্টর সালুঙ্কে’ এ বার কে হতে চলেছেন, তা নিয়েও চলছে বিস্তর জল্পনা।

Advertisement

লালবাজারের কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, টিভির ‘সিআইডি’র সঙ্গে কিছুটা হলেও মিল রয়েছে লালবাজারের এই নতুন উদ্যোগের। পুলিশ সূত্রের দাবি, রাজ্য ফরেন্সিক গবেষণাগারে নানা জায়গা থেকে নমুনা আসে। ফলে কাজের চাপও বেশি থাকে। তাই অনেক সময়েই ঘটনাস্থলে যেতে দেরি হয়ে যায় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের। ফলে পরে রিপোর্ট পেতেও দেরি হয়। বেলগাছিয়ায় ফরেন্সিক গবেষণাগারে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে ওই ইউনিটটির আধুনিকীকরণও সে ভাবে সম্ভব হয়নি। ফলে সীমিত পরিকাঠামোর কারণেও সমস্যা হয়। লালবাজার সূত্রের খবর, রিপন স্ট্রিটে নিজস্ব ফরেন্সিক ইউনিট তৈরি হলে এই পরীক্ষায় যে সব নতুন প্রযুক্তি রয়েছে, তা ব্যবহার করা হবে বলে স্থির হয়েছে। সে জন্য আরও কী কী নতুন প্রযুক্তি আনা হবে, তার তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে।

যেহেতু থানা বা গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেরাই প্রথমে কোনও ঘটনাস্থলে পৌঁছন, তাই তাঁদের ফরেন্সিক পরীক্ষার ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে দ্রুত নমুনা সংগ্রহে সুবিধা হবে। এ কথা মাথায় রেখে তদন্তে গতি আনতে তদন্তকারীদের ফরেন্সিকে প্রাথমিক পাঠ দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শেখাবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘সাব-ইনস্পেক্টরেরা প্রশিক্ষণের সময় ফরেন্সিকের পাঠ নেন। কিন্তু নতুন কী কী প্রযুক্তি এসেছে এবং ফরেন্সিক বিজ্ঞান কত দূর এগিয়েছে, সে ব্যাপারে তাঁদের জ্ঞান সীমিত। তাই তাঁদের এই নতুন পদ্ধতি শেখানো হবে।’’ কলকাতা পুলিশের নিজস্ব ওই ফরেন্সিক ইউনিট চালু হয়ে গেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করার কাজ আরও দ্রুত করা যাবে বলেই দাবি করছেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement