যাচাই: মেট্রোর স্তম্ভ তৈরির কাজের আগে শুরু হল যান নিয়োন্ত্রণের পরীক্ষামূলক প্রস্তুতি। শনিবার, চিংড়িঘাটায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
চিংড়িঘাটা মোড়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেই আঙুল ওঠে পিছিয়ে থাকা ‘স্টপ লাইন’ নিয়ে। সল্টলেকের দিক থেকে বাইপাসে ওঠার মুখে গাড়ির ‘স্টপ লাইন’ এত পিছিয়ে কেন, সেই প্রশ্ন ওঠে বার বারই। অপেক্ষাকৃত ঢালু জায়গা এবং পিছিয়ে থাকা ‘স্টপ লাইন’ থেকে গতি বাড়িয়ে এগোতে গিয়েই গাড়িচালকেরা দুর্ঘটনার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। অথচ, পিছিয়ে থাকা ‘স্টপ লাইন’ই এখন আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে পুলিশের কাছে।
শনিবার থেকে চিংড়িঘাটা মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত ওই জায়গায় গত কয়েক বছর ধরে মেট্রোর স্তম্ভ তৈরির কাজ আটকে রয়েছে। ফলে, থমকে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাজও। বাইপাস থেকে ওই জায়গা বরাবর সল্টলেকগামী মেট্রোপথের জন্য চিংড়িঘাটা মোড়ে ৩১৮ নম্বর স্তম্ভ তৈরি করা প্রয়োজন। কিন্তু যানজটের কথা ভেবে এত দিন সেই অনুমতি দেয়নি কলকাতা পুলিশ। ওই কাজ এ বার নতুন করে শুরু করতে চায় মেট্রো। তাই আগামী চার দিন ওই এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তা দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ দিন থেকে শুরু হয়ে এই যান নিয়ন্ত্রণ চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত।
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বাইপাসের উপরে ১৬ মিটার দীর্ঘ ও ১৬ মিটার চওড়া জায়গা গার্ডরেল দিয়ে ঘেরা। সেখানে একটি জায়গা রং দিয়ে চিহ্নিত, পাশে লেখা পি-৩১৮। এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘ওখানেই ৩১৮ নম্বর স্তম্ভ উঠবে।’’ পাশেই বাইপাস থেকে নিউ টাউনগামী উড়ালপুলের একটি স্তম্ভ। সেটিকে মাঝে রেখে অনেকটা রাস্তা সায়েন্স সিটিগামী যান চলাচলের জন্য ছাড়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সল্টলেকের দিক থেকে চিংড়িঘাটা মোড়ে আসার ‘স্টপ লাইন’ অনেকটা ভিতরে হওয়ায় গাড়ি যাতায়াত করাতে বেশি জায়গা পাচ্ছে পুলিশ। এ ছাড়া, উল্টোডাঙার দিকে যাওয়ার রাস্তা কিছুটা সরু করে ক্যানাল ওয়েস্ট রোড দিয়ে বাইপাস থেকে গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। আর বাইপাসমুখী গাড়ি যাচ্ছে চাউলপট্টি রোড ধরে। সল্টলেক থেকে আসা গাড়িগুলিকে আগে বাঁ দিকের লেন দিয়ে বাইপাসে তুলে দিতেন বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। কিন্তু এ দিন থেকে তা বন্ধ করে সমস্ত গাড়িকেই সিগন্যাল মেনে চালাতে বলা হয়েছে। পথচারীদের ব্যবহার করতে বলা হয়েছে ফুট ওভারব্রিজ।
ট্র্যাফিক পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার পর্যন্ত দেখা হবে। শনি-রবিবার গাড়িচালকদের কিছুটা অভ্যাস করানোর জন্য এটা করা হল। সোমবারের ব্যস্ত দিনে যানজট হচ্ছে কি না, তা দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশা, যানজট সামলে এ বার হয়তো স্তম্ভ নির্মাণের ছাড়পত্র মিলবে।