বিনীত গোয়েল। ফাইল চিত্র।
কোভিডের সংক্রমণ ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে শহর তথা গোটা রাজ্যে। পুলিশবাহিনীতেও সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এই অবস্থায় বাড়ি বাড়ি না গিয়ে ভিডিয়ো কল এবং ফোনে ‘প্রণাম’ প্রকল্পের সদস্যদের নিয়মিত খোঁজখবর নিতে নির্দেশ দিল লালবাজার। সোমবার দু’টি ডিভিশনের আধিকারিক ও ‘প্রণাম-এর সদস্যদের একাংশের সঙ্গে ভার্চুয়াল-বৈঠক করেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল। সেখানে ওই প্রবীণদের বিষয়ে খোঁজ নেন কমিশনার। বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এই নির্দেশও দেন তিনি।
পুলিশকর্তাদের মতে, বর্তমানে বাহিনীর সদস্যদের সব কাজ করতে হয়। এ দিকে, ‘প্রণাম’-এর সদস্যেরা বয়স্ক, অনেকেরই বিভিন্ন অসুখ (কোমর্বিডিটি) রয়েছে। তাই বহিরাগত পুলিশকর্মীদের সান্নিধ্যে এলে তাঁদেরও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই কমিশনার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবেই এই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে প্রয়োজনে অবশ্যই ‘প্রণাম’-এর সদস্যদের পাশে ব্যক্তিগত ভাবে দাঁড়াতে বলা হয়েছে পুলিশকর্মীদের।
লালবাজার জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই নেতাজিনগর, গড়িয়াহাট-সহ একাধিক থানা তাদের এলাকার ‘প্রণাম’-এর সদস্যদের নিয়ে একাধিক গ্রুপ তৈরি করেছে। সপ্তাহে এক দিন করে ভার্চুয়াল বৈঠকে সংশ্লিষ্ট গ্রুপের সদস্যদের খোঁজ নেবেন থানার আধিকরিকেরা। ফোনের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে।
মূলত যাঁদের সন্তান বাইরে থাকেন, এমন বয়স্ক নাগরিক অথবা নিঃসন্তান এবং অবিবাহিত প্রবীণ-প্রবীণাদের নিয়ে ২০০৯ সালে শুরু হয়েছিল কলকাতা পুলিশের এই ‘প্রণাম’ প্রকল্প। জরুরি প্রয়োজনে এই প্রকল্পের সদস্যেরা ২৪ ঘণ্টাই পুলিশের বিশেষ সাহায্য পান। প্রতি থানায় একাধিক পুলিশকর্মী রয়েছেন, যাঁরা ‘প্রণাম’-এর সদস্যদের নিয়মিত খবর রাখেন। এক পুলিশকর্তা জানান, বর্তমানে এই প্রকল্পের সদস্য সংখ্যা কম-বেশি ১৮ হাজার। কমিশনার জানিয়েছেন, তাঁদের যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয় সেটা দেখবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা।
এর পাশাপাশি সোমবারের বৈঠকে কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক প্রতারণা দমন শাখার তরফে সাইবার অপরাধ, অনলাইন প্রতারণা-সহ একাধিক বিষয়ে ‘প্রণাম’-এর সদস্যদের সতর্ক করা হয়। পুলিশকর্তারা জানান, বর্তমানে সাইবার অপরাধীরা নানা অছিলায় বয়স্কদের ফোন করে তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য জেনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে বয়স্ক নাগরিকদের অবহিত করা হয়। অতিমারির বিভিন্ন দিক নিয়েও তাঁদের সচেতন করেন চিকিৎসকেরা।