জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, কয়েকটি ব্র্যান্ডের মোবাইলের দাম এ দেশের তুলনায় বাংলাদেশে প্রায় দ্বিগুণ। —নিজস্ব চিত্র।
এ দেশ থেকে হাজার দুয়েক টাকায় চোরাই মোবাইল কিনে বাংলাদেশে তা বিক্রি হত অন্তত ২৫ হাজার টাকায়। বৃহস্পতিবার এ রকমই একটি মোবাইল পাচারচক্রের হদিশ পেল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। পাকড়াও করা হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক-সহ দু’জনকে। উদ্ধার করা হয়েছে ১০৭টি বিভিন্ন কোম্পানির স্মার্ট ফোন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মধ্য কলকাতার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের একটি গেস্ট হাউস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ জাহাঙ্গির এবং আব্দুল গফ্ফর বিশ্বাসকে। জাহাঙ্গির বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গী গফ্ফর নদিয়ার গাংনাপুরের বাসিন্দা। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, কলকাতা বা শহরতলিতে প্রতি দিন যে মোবাইল ফোন চুরি যায়, তা শহরের কয়েকটি নির্দিষ্ট চোরাই বাজারে বিক্রি হয়। সেই বাজারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে এই বাংলাদেশি চক্র। তারা বন্দর এলাকায় এ রকম একটি চোরাই বাজার থেকে এই মোবাইলগুলো কিনেছিল।
জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, কয়েকটি ব্র্যান্ডের মোবাইলের দাম এ দেশের তুলনায় বাংলাদেশে প্রায় দ্বিগুণ। ওই মোবাইলের চাহিদা প্রচুর সে দেশে। চোরাই বাজার থেকে ওই ধরনের মোবাইল ২ থেকে ৫ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে যায় বাংলাদেশি পাচারকারীরা। সে দেশে ওই মোবাইলের বাইরের অংশ কিছুটা বদলে বিক্রি করা হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। কয়েক বছর আগে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স এ রকম প্রায় ৩৫০টি মোবাইল উদ্ধার করেছিল।
আরও পড়ুন: রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছাবসর চেয়ে মুকুল-পুত্রের ফেসবুক পোস্ট
আরও পড়ুন: মণীশ-হত্যায় ফাঁস চ্যাট, অর্জুনের ‘চর’ খুঁজতে ডামাডোল পুলিশের অন্দরে
বাংলাদেশি ওই মোবাইল পাচারচক্র এখন পুলিশের মাথাব্যথার কারণ। কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দাকর্তা বলেন, ‘‘প্রথম সমস্যা, আমাদের এখানে যে মোবাইল চুরি হচ্ছে তা বাংলাদেশে চলে গেলে আমরা উদ্ধার করতে পারছি না।” দ্বিতীয় সম্ভবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা। তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘এই চোরাই মোবাইল সীমান্ত পেরিয়ে কোনও জঙ্গি দলের সদস্যদের কাছে পৌঁছলে সেটা আরও চিন্তার।”
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত জাহাঙ্গির নদিয়া সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকেছিল কোনও রকম বৈধ নথি ছাড়াই। এ দেশে তার এজেন্ট গফ্ফর। সেই তাকে কলকাতার চোরাই বাজারে নিয়ে যায় মোবাইল কিনতে। ধৃতদের কাছ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে।