Coronavirus

করোনার হটস্পট কলকাতা, কী ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন-পুরসভা?

যে এলাকায় করোনা রোগীর সন্ধান মিলছে, ওই জায়গাটিকে প্রথমে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ১৭:২০
Share:

‘হটস্পট’-এর অলিগলি এ ভাবেই আটকে রাখা হয়েছে। ছবি- পিটিআই

এ রাজ্যের চার জেলাকে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই তালিকায় নাম রয়েছে কলকাতার। কেন্দ্রের তরফে হটস্পট ঘোষণার আগেই অবশ্য শহরের বিভিন্ন এলাকাকে চিহ্নিত করে করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ। ওই এলাকাগুলিকে ‘স্পর্শকাতর’ বা ‘হাই রিস্ক জোন’ হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

Advertisement

কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কলকাতায়?

• হটস্পট (রেড জোন)-এর ‘লার্জ আউট ব্রেক’ অর্থাৎ যেখানে বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন, সেই তালিকায় নাম রয়েছে কলকাতার। একই সঙ্গে রয়েছে হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলাও। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই জেলাগুলিতে।

Advertisement

• যে এলাকায় করোনা রোগীর সন্ধান মিলছে, ওই জায়গাটিকে প্রথমে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সেখানে আরও কয়েকজন রোগীর সন্ধান মিললে, ‘কোর’ এবং ‘বাফার’ জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

• ‘কোর’ জোনের বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না। তাঁদের বাড়ি বাড়ি অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী পৌঁছে দেবে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। বিশেষ জরুরি প্রয়োজনে পুলিশের অনুমতি নিয়ে বেরোতে পারবেন ‘বাফার’ জোনের বসবাসকারীরা। সে ক্ষেত্রে ‘কোর’ জোনের বাসিন্দাদের অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হবে না।

• আক্রান্তদের বাড়ি জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলবে। তার পাশাপাশি আশপাশের এলাকায় নিয়মিত ভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করবেন পুরসভার কর্মীরা। হটস্পট ঘোষণা হলেও, কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, স্বাভাবিক জীবনে এর তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না।

• কী ভাবে পরিস্থিতর মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যে আধিকারিকদের নিয়েআবাসন দফতরের সচিব ওঙ্কারসিংহ মিনা, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বৈঠকও সেরেছেন।

আরও পড়ুন: বাবার করোনা, হোম কোয়রান্টিনে রাখা হল অভিনেত্রী-সাংসদের মা এবং বোনকে

• এক দিকে যেমন তথ্য সংগ্রহ, এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা, বাড়িতে গিয়েও সম্ভাব্য রোগীর খোঁজ চালাবে পুরসভা, তেমনই পুলিশ ওই এলাকায় বিশেষ নজর রাখবে। সেখানকার বাসিন্দারা যাতে সুরক্ষিত থাকেন, তার সব রকম ব্যবস্থা করা হবে।

• প্রতিটি বরোতে একজন করে নোডাল অফিসারের উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা স্বাস্থ্যভবন এবং পুরসভাকে নিয়মিত তথ্য দেবেন।

• শহরবাসী মাস্ক পরে বেরোচ্ছে কী না সে বিষয়েও নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

• শহরের বস্তি এলাকাতে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে। ওই সব এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের সঙ্গে পুর প্রতিনিধিরাও এলাকাবাসীদের সাহায্য করবেন। প্রয়োজনে মাস্ক, স্যানিটাইজার, খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হবে।

• বিভিন্ন এলাকায় হিন্দি, বাংলা ও উর্দুতেও মাইকে প্রচার চলবে। বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট ও নাকা তল্লাশি আরও কড়া হবে। স্থানীয় থানা ও ট্র্যাফিক গার্ড যৌথ ভাবে নাকা তল্লাশি করবে।

• বাজারগুলিতে সুরক্ষায় জোর দেওয়া হচ্ছে। পুরসভার তালিকায় এবং তার বাইরে যে বাজারগুলি রয়েছে, সেখানে চলাফেলার জায়গাতেও পসরা নিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা। তা আর হবে না। পুরসভার বাজার দফতরের মেয়র পারিষদ আমিরউদ্দিন ববি বাজার পরিদর্শনও করছেন।

আরও পড়ুন: এখন যা কিছু করতে হবে গরিবদের দিকে তাকিয়েই, পরার্শ তিন অর্থনীতিবিদের

• বাজারের বাইরে ফুটপাত অথবা সামনে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে বিক্রেতাদের বসানো হবে। এন্টালি, কলেজ স্ট্রিট বাজার, বাঁশদ্রোণী, বেহালার সন্তোষপুর বাজারেও ওই ব্যবস্থা চালু হতে হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, এর পরে শহরের অন্য বাজারগুলোতেও পুলিশ এবং পুরসভা একসঙ্গে নজরদারি চালাবে।

লালবাজার থেকে বিভিন্ন থানা ও ডেপুটি কমিশনারদের কাছেও বিশেষ নির্দেশ পৌঁছেছে। ভিড় কমাতে অলিগলিতেতো বটেই, আবাসনের ভিতরেও প্রয়োজনে নজরদারি চলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement